লিভার এনজাইম কমানোর উপায়
আপনার লিভার স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং লিভার এনজাইম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা অত্যন্ত জরুরি। লিভার এনজাইম, বিশেষ করে SGPT এবং SGOT, লিভারের কার্যকারিতা নির্ণয়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সাধারণত, SGPT এর স্বাভাবিক মাত্রা রক্তে ৭ থেকে ৫৬ ইউনিট প্রতি লিটার থাকে।
লিভার এনজাইমের মাত্রা বেড়ে গেলে তা নানা রোগের ইঙ্গিত দেয়, যেমন হেপাটাইটিস, অ্যালকোহল নির্ভর রোগ, স্থূলতা এবং অটোইমিউন ডিসঅর্ডার। বর্তমানে যকৃৎ এনজাইম নিয়ন্ত্রণ ও লিভার রোগ প্রতিরোধের উপায় নিয়ে গবেষণা বাড়ছে।
লিভার ভালো রাখার জন্য সুষম খাদ্য, যেমন ফলমূল, শাকসবজি, এবং সঠিক পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ অত্যন্ত কার্যকর। এছাড়াও, নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ, যেমন যোগব্যায়াম, প্ল্যাঙ্কিং এবং ওজন প্রশিক্ষণ লিভারের সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়ক।
লিভারে চর্বি জমলে ফ্যাটি লিভার রোগের ঝুঁকি বাড়ে, যা পর্যায়ক্রমে সারোসিসের মত গুরুতর রোগে রূপ নিতে পারে। তাই লিভার স্বাস্থ্য বজায় রাখতে অ্যালকোহল সীমিত করা এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
লিভার এনজাইম কী?
লিভার এনজাইম বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলী পরিচালনা করে। সাধারণত লিভার প্রধানত ALT এবং AST এনজাইমের মাধ্যমে আমাদের শরীরের অন্যান্য অঙ্গের সাথে কাজ করে। এই এনজাইমগুলি প্রোটিন ভাঙ্গানো এবং বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের বিনিময় প্রক্রিয়ার জন্য অপরিহার্য। লিভার এনজাইমের ভূমিকা দেখে আমরা আমাদের শরীরের বিভিন্ন শারীরিক পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতন থাকতে পারি এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারি।
লিভারের গুরুত্ব এবং কার্য প্রক্রিয়া
লিভার আমাদের শরীরে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে যেমন: প্রোটিন সংশ্লেষণ, টক্সিন নির্মূল করা, এবং হরমোন উৎপাদন করা। লিভারের ক্ষতি হলে, এই কাজগুলি সম্পাদন করা কঠিন হয়ে পড়ে।
প্রধান লিভার এনজাইম এবং তাদের ভূমিকা
লিভার প্রধানত চারটি ধরনের এনজাইম উৎপন্ন করে: ALT, AST, ALP এবং GGT।
- ALT (Alanine Transaminase): এটি লিভারের প্রধান এনজাইম যা লিভারের ক্ষতি শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়। ALT নিরীক্ষণ করে আমরা লিভারের সঠিক অবস্থা জানতে পারি।
- AST (Aspartate Transaminase): এই এনজাইমটি লিভারের পাশাপাশি হৃদয়, পেশী এবং কিডনি তেও পাওয়া যায়। AST এর মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া মানেই লিভারের ক্ষতি হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়।
- ALP (Alkaline Phosphatase): এই এনজাইম হাড় এবং পিত্ত নালীতে পাওয়া যায় এবং লিভারের স্বাভাবিক কার্যক্রমের জন্য এটি অত্যন্ত জরুরী।
- GGT (Gamma-Glutamyl Transferase): ALP এর সাথে সংযুক্ত থেকে পিত্ত নালী এবং লিভারের স্বাস্থ্য সঠিক রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
লিভার এনজাইম বৃদ্ধি পাওয়ার কারণগুলি
লিভার এনজাইম বৃদ্ধির অনেক কারণ থাকতে পারে, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ক্ষতিকর অভ্যাস এবং অসুস্থতাসমূহের সাথে প্রতিনিয়ত যুক্ত। নীচে লিভার এনজাইম বৃদ্ধি পাওয়ার প্রধান কারণগুলি বিশদে আলোচিত হলো।
অ্যালকোহল এবং ড্রাগ ব্যবহার
অ্যালকোহল এবং বিভিন্ন ধরণের ড্রাগের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার লিভারের পরিবর্তন সাধন এবং লিভার এনজাইমের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। উচ্চমাত্রার অ্যালকোহল গ্রহণ লিভারের প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা ফলস্বরূপ লিভার এনজাইম বৃদ্ধি ঘটায়।
স্থূলতা এবং ফ্যাটি লিভার রোগ
স্থূলতা ফ্যাটি লিভার রোগের একটি মূল কারণ। ফ্যাটি লিভার রোগ বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার প্রভাবে লিভারের প্রদাহ এবং এনজাইম বৃদ্ধি হয়ে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রতি বছর যকৃতয় ২ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয় ফ্যাটি লিভার রোগের কারণে।
যকৃতের প্রদাহ এবং সংক্রমণ
যকৃতের প্রদাহ, যা সাধারণত হেপাটাইটিস ভাইরাস দ্বারা সংঘটিত হয়, লিভারের এনজাইমের উপর প্রভাব ফেলে এবং তা বৃদ্ধি ঘটাতে পারে। লিভারে জীবাণুঘটিত ফোড়া এবং সংক্রমণ যেমন হেপাটোমেগালি সাধারণত যকৃতের প্রদাহ সৃষ্টি করে।
মেডিকেশন এবং অটোইমিউন ডিসঅর্ডার
বিভিন্ন মেডিকেশন এবং অটোইমিউন ডিসঅর্ডারও লিভার এনজাইম বৃদ্ধির জন্য দায়ী। কিছু অ্যান্টিবায়োটিক এবং অন্যান্য ঔষধ যকৃতের কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাতে পারে, যা লিভারের এনজাইম বৃদ্ধি করে। এছাড়া, কিছু অটোইমিউন রোগ যেমন উইলসন রোগও লিভারের উপর প্রভাব ফেলে।
ফ্যাটি লিভার রোগ, যকৃতের প্রদাহ এবং মাদক ব্যবহারের কারণে লিভার এনজাইমের উপর প্রভাব অত্যন্ত মৌলিক এবং গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলির মধ্যে অন্তর্গত, যা সঠিকভাবে মোকাবিলা করা প্রয়োজন।
উচ্চ লিভার এনজাইমের লক্ষণগুলি
উচ্চ লিভার এনজাইম সাধারণত লিভারের কার্যকারিতা ও স্বাস্থ্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত একাধিক সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এই এনজাইম বৃদ্ধির লক্ষণগুলি দ্রুত চিনতে পারা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে সময়মতো চিকিৎসা শুরু করা যায়।
পেটের ব্যথা এবং কষ্ট
লিভার এনজাইম বৃদ্ধি পেলে পেটের ব্যথা ও কষ্ট হয়, যা লিভার এনজাইমের লক্ষণ অন্যতম। সাধারণত পেটের উপরের অংশে এই ব্যথা অনুভূত হয় এবং এটি তীব্র বা মাঝারি মাত্রার হতে পারে। ব্যথার পাশাপাশি পেটে ফোলা ও অস্বস্তিও দেখা দিতে পারে।
জন্ডিস এবং বমি বমি ভাব
জন্ডিস, অর্থাৎ ত্বক ও চোখের হলুদ হয়ে যাওয়া, একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। এটি সাধারণত বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে ঘটে, যা লিভার এনজাইমের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। পেটের ব্যথা এবং জন্ডিসের পাশাপাশি, অনেক সময় বমি বমি ভাবও দেখা যায়, যা খাবারের প্রতি অরুচি ও সামগ্রিক ক্লান্তির সূচনা করে।
উন্নত লিভার এনজাইম নির্ণয় প্রক্রিয়া
আপনার লিভার এনজাইমগুলি নির্ণয় করতে যোগাযোগ করতে হবে একজন হেপাটোলজিস্টের সাথে, যারা বিশেষজ্ঞ ভাবে ডায়াগনোস্টিক টেস্টিং পরিচালনা করে থাকেন। সাধারণত লিভার এনজাইম নির্ণয়ের জন্য বেশ কয়েকটি পরীক্ষার মাধ্যমে করা হয়:
- রক্ত পরীক্ষা
- এমআরআই
- সিটি স্ক্যান
- আল্ট্রাসাউন্ড
রক্ত পরীক্ষা সবচেয়ে প্রচলিত লিভার এনজাইম পরীক্ষা, যার মাধ্যমে ALT, AST, ALP, এবং GGT এনজাইমের মাত্রা নির্ধারণ করা যায়। ICD-10 কোড R74.0 উচ্চ লিভার এনজাইমের মাত্রাকে নির্দেশ করে। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা যায় যে, উচ্চ লিভার এনজাইমের মাত্রাকে নির্ধারণ করা অ্যালকোহল এবং ড্রাগ ব্যবহার, স্থূলতা, ফ্যাটি লিভার রোগ, ভাইরাল সংক্রমণ, ওষুধ ব্যবহার, এবং অটোইমিউন ডিসঅর্ডারের কারণে হতে পারে।
উচ্চ মাত্রার লিভার এনজাইমগুলি যেমন SGPT, রক্তে ফুটো করতে পারে এবং এটি লিভার ক্ষতির আন্দাজ দেয়। উদাহরণস্বরূপ, SGPT এনজাইম স্তর সাধারণত ৭ থেকে ৫৬ ইউনিট প্রতি লিটারের মধ্যে থাকে। যদি এই মাত্রা ৫৬ ইউনিট প্রতি লিটার ছাড়িয়ে যায়, তবে এটি জন্ডিস, ফ্যাটি লিভার রোগ এবং সিরোসিসসহ অন্যান্য সমস্যার সাথে সম্পর্কিত হতে পারে।
জনগণনা তথ্য অনুযায়ী, লিভার ৫০০ এরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ কার্য পরিচালনা করে। উচ্চ লিভার এনজাইম সনাক্তের জন্য সঠিক এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি, নিয়মিত ব্যায়াম, এবং অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।
How to Lower Liver Enzymes
লিভার এনজাইম কমানোর একাধিক উপায় রয়েছে, যা অনুসরণ করলে আপনি আপনার লিভারের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে পারবেন। এখানে কিছু সাধারণ কৌশল আলোচনা করা হলো, যা আপনার লিভারের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাবে।
স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা
স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখতে এবং লিভার এনজাইম কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরী। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে নির্দিষ্ট ওজন কমানোর প্রোগ্রামে যুক্ত ৬৬.৭% মানুষের ALT লেভেল উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। অতিরিক্ত ওজন ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি বাড়ায়, যা লিভার এনজাইম বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করে। স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ এবং নিয়মিত ব্যায়াম ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
অ্যালকোহল সীমিতকরণ
মদ্যপান বিধি মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অ্যালকোহল লিভারের স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং লিভার এনজাইম বৃদ্ধি করতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, অ্যালকোহল গ্রহণ সীমিত করলে লিভার এনজাইম লেভেল কমাতে সহায়ক হয়।
বুদ্ধিমানের সাথে ওষুধ ব্যবহার
ওষুধ গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা আবশ্যক, কারণ কিছু ওষুধ লিভার এনজাইমকে প্রভাবিত করতে পারে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০% লিভার বিষক্রিয়া ঘটনা ঘটেছে হার্বাল এবং ডায়েটারি সাপ্লিমেন্ট যেমন অ্যানাবলিক স্টেরয়েড, গ্রিন টি এক্সট্র্যাক্ট এবং মাল্টি-ইনগ্রেডিয়েন্ট সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের কারণে। মদ্যপান বিধি মেনে ওষুধ গ্রহণ এবং লিভার-বান্ধব চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত।
সুষম খাদ্য গ্রহণ
সুষম খাদ্য গ্রহণের মধ্যে সালফার সমৃদ্ধ সবজি যেমন পেঁয়াজ এবং রসুন, ক্রুসিফেরাস সবজি যেমন ব্রকলি এবং কালে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, যা লিভারের বিষাক্ততা প্রতিরোধে সহায়ক। এছাড়াও, উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার গ্রহণ করে আপনার দেহের টক্সিন দ্রুত অপসারণ করতে সহায়ক হতে পারে, যা লিভার এনজাইম লেভেল কমাতে সহায়ক।
নিয়মিত ব্যায়াম
ফিটনেস বজায় রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন। গবেষণা অনুযায়ী প্রাপ্তবয়স্করা প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট শারীরিক কার্যকলাপ করলে ALT লেভেলে উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা যায়। শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা আপনার লিভারের কার্যক্ষমতা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত জরুরী।
উপরোক্ত পরিষ্কার পরামর্শ এবং প্রয়োজনীয় সতর্কতা মেনে চলে আপনি আপনার লিভারের এনজাইম লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখতে পারেন।
লিভার এনfor কমানোর প্রাকৃতিক উপায়
লিভার এনজাইম বাড়ার সমস্যা সম্পর্কে অনেকেই সচেতন, কিন্তু লিভার এনজাইম কমানোর প্রাকৃতিক উপায় সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। বিভিন্ন গবেষণা এবং বিজ্ঞানসম্মত প্রমাণের মাধ্যমে আমরা এখন জানি যে কিছু প্রাকৃতিক উপায়ে লিভার এনজাইম কমানো সম্ভব যা সুস্থ লিভারের জন্য অপরিহার্য।
কফি পান
২০১৭ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতিদিন ১ থেকে ৪ কাপ কফি পান করলে বিশেষ করে ALT মাত্রা কমানো সম্ভব। এছাড়া এটি যকৃতের রোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেও সহায়ক। কফিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং লিভার এনজাইমের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
ফলিক এসিড গ্রহণ
ফলিক এসিড লিভারের এনজাইম নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০১৬ সালের একটি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে ফলিক এসিডের অভাব ALT মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং লিভারের ক্ষতি করে। তাই ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাদ্য অথবা সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ লিভার এনজাইম কমানোর জন্য সহায়ক হতে পারে।
কম চিনি যুক্ত খাদ্যাভ্যাস
২০১৯ সালের একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গেছে যে ৮ সপ্তাহ কম চিনি যুক্ত খাদ্য গ্রহণ করলে NAFLD-এ আক্রান্ত কিশোরদের মধ্যে লিভার এনজাইমের মাত্রা কমে। চিনি কমিয়ে ব্যবস্থাপনা করা বিশেষ করে লিভারের মোট ফ্যাট স্তরকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়ক।
লিভার এনজাইম কীভাবে কমানো যায়
লিভারের গুরুত্ব এবং কার্য প্রক্রিয়া
লিভার শরীরের অন্যতম প্রধান অঙ্গ যা প্রোটিন ভাঙ্গানো এবং বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে। এটি বিভিন্ন এনজাইম যেমন ALT, AST, ALP, এবং GGT এর মাধ্যমে কাজ করে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারা লিভারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
প্রধান লিভার এনজাইম এবং তাদের ভূমিকা
প্রধান লিভার এনজাইমগুলি হলো ALT, AST, ALP, এবং GGT। এদের মাধ্যমে লিভার প্রোটিন ভাঙ্গানো এবং রাসায়নিক বিক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। এসব এনজাইমের সমন্বয়ে লিভার শরীরকে বিভিন্ন ধরনের টক্সিন মুক্ত রাখে এবং মেটাবলিক কার্যপ্রণালী সঠিকভাবে চালায়।
অ্যালকোহল এবং ড্রাগ ব্যবহার কি লিভার এনজাইমে প্রভাব ফেলে?
হ্যাঁ, দীর্ঘমেয়াদী অ্যালকোহল এবং বিভিন্ন ড্রাগের ব্যবহার লিভারের এনজাইমের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে। এটি লিভারের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে।
স্থূলতা এবং ফ্যাটি লিভার রোগ
স্থূলতা ফ্যাটি লিভার রোগের একটি মূল কারণ। অতিরিক্ত ফ্যাট জমার ফলে লিভার প্রদাহিত হতে পারে এবং এর ফলে লিভারের এনজাইমের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে, যা শরীরের অন্যান্য অংশের উপর প্রভাব ফেলে।
যকৃতের প্রদাহ এবং সংক্রমণ কিভাবে লিভারে প্রভাব ফেলে?
যকৃতের প্রদাহ এবং সংক্রমণের কারণে লিভারের এনজাইমের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এটি বিভিন্ন প্রদাহজনিত রোগ এবং ভাইরাল সংক্রমণের কারণে হতে পারে, যা লিভারের স্বাভাবিক কার্যপ্রণালীকে ব্যাহত করে।
মেডিকেশন এবং অটোইমিউন ডিসঅর্ডার কি লিভারের জন্য হানিকর?
হ্যাঁ, কিছু মেডিকেশন এবং অটোইমিউন ডিসঅর্ডার লিভারের উপর হানিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এদের কারণে লিভারের এনজাইমের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে এবং লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে।
পেটের ব্যথা এবং কষ্ট কি উচ্চ লিভার এনজাইমের লক্ষণ?
হ্যাঁ, পেটের ব্যথা এবং কষ্ট উচ্চ লিভার এনজাইমের সাধারণ লক্ষণ। এছাড়া গাঢ় মল, ক্লান্তি, জন্ডিস (ত্বক বা চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া), এবং বমি বমি ভাবও হতে পারে।
জন্ডিস এবং বমি বমি ভাব কি লিভার এনজাইম বৃদ্ধি হওয়ার লক্ষণ?
জন্ডিস এবং বমি বমি ভাবও উচ্চ লিভার এনজাইমের লক্ষণ হতে পারে। লিভারের ক্ষতির কারণে ত্বক এবং চোখ হলুদ হয়ে যায় এবং বমির প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
লিভার এনজাইম নির্ণয়ের জন্য কোন কোন পরীক্ষাগুলি করা হয়?
লিভার এনজাইম নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের রক্ত পরীক্ষা, এমআরআই, সিটি স্ক্যান বা আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়। এসব পরীক্ষাগুলি হেপাটোলজিস্ট বা লিভার বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরিচালিত হয়।
স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা কি লিভার এনজাইম কমাতে সাহায্য করে?
হ্যাঁ, স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা লিভার এনজাইম কমাতে অত্যন্ত জরুরী। প্রচুর পানি পান, সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
অ্যালকোহল সীমিতকরণ কি লিভার এনজাইম কমাতে সহায়ক?
হ্যাঁ, অ্যালকোহল সীমিতকরণ লিভার এনজাইম কমাতে সহায়ক। অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করুন।
সুষম খাদ্য গ্রহণের গুরুত্ব
সুষম খাদ্য গ্রহণ লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষার্থে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টিকর খাদ্য এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের মাধ্যমে লিভার এনজাইম নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে।
নিয়মিত ব্যায়ামের উপকারিতা
নিয়মিত ব্যায়াম লিভার এনজাইম কমাতে সহায়ক। এটি শরীরের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে এবং লিভারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।