দুবাই – আরব বিশ্বের স্বপ্নের শহর

দুবাই ভ্রমণের অভিজ্ঞতা একজন ভ্রমণপিপাসুর জন্য সত্যিই মহিমান্বিত। মরুর এই রাজ্যটি এখন অত্যাধুনিকতার নগরী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। সাতটি অঞ্চলের সমন্বয়ে গঠিত সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যতম শহর দুবাই দ্রুত গতি সম্পন্ন উন্নয়ন ও পর্যটনের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত।

গত ২০১৮ সালে মাস্টারকার্ডের প্রতিবেদনে দেখা যায়, দুবাই ছিল বিশ্বের চতুর্থ জনপ্রিয় শহর পর্যটকদের জন্য, যেখানে ১৫.৭৯ মিলিয়ন বিদেশি পর্যটক শহরটি ঘুরেছেন। দুবাই ভ্রমণের এমনতা গন্তব্যের মূল আকর্ষণই হলো এর সমুদ্রতীর, আকাশচুম্বী ভবন ও অভিজাত শপিং কেন্দ্র।

Contents show

দুবাইয়ের ইতিহাস ও ঐতিহ্য

দুবাইয়ের এই মহানগরী শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মূল্যবাণ ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধারণ করে রেখেছে। বাস্তবিকভাবে, মরুভূমির মধ্যে ছোট্ট এক জনগোষ্ঠী থেকে এই শহরের আরম্ভ হয়েছিল, যা পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী এক আধুনিক মেগাসিটির পর্যায়ে পৌঁছেছে।

প্রাচীন ইতিহাস

দুবাই ইতিহাস দেখতে গেলে দেখা যায়, আর্কিওলজিক্যাল প্রমাণ অনুযায়ী, দুবাই এবং আশেপাশের অঞ্চলে ১০০,০০০ থেকে ১২৫,০০০ বছর আগে মানব বসতি ছিল। প্রাচীনকালে, দুবাই মূলত মৎস্যজীবী ও মুক্তা সংগ্রহকারী উপজাতিদের একটি আধার ছিল।

সংস্কৃতি দুবাই সব সময়ই মেসোপটেমিয়ান এবং স্থানীয় বাণিজ্যের মেলবন্ধন দেখিয়েছে। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে ইসলাম ধর্মের আগমনের পর থেকে এই অঞ্চল ইসলামিক শাসনের অধীনে আসে, যা ৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে জুলফারের গুরুত্ব বৃদ্ধি করে।

আধুনিক উন্নয়ন

আধুনিক দুবাই উন্নয়নের পথ শুরু হয় ১৯৬০’র দশকে। প্রাথমিকভাবে, ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে মুক্তি পেতে ১৯৬৮ সালে সাতটি এমিরেট একত্রে মিলিত হয়ে একটি রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর ১৯৭১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রতিষ্ঠিত হয়।

দুবাইয়ের দ্রুত উন্নয়ন গোটা বিশ্বের নজর কেড়ে নেয়। বর্তমানে, দুবাই উন্নত আর্কিটেকচার, প্রযুক্তি এবং অর্থনীতির মাধ্যমে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যাবসায়িক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। ২০১৯ সালে, দুবাইয়ের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৩,৩৫৫,৯০০ জন, যার মধ্যে ৮৫% মানুষ প্রবাসী।

  • প্রাচীন এবং আধুনিক ইতিহাসের মেলবন্ধনে এগিয়ে চলা দুবাই আজ বিশ্বসমাজে একটি অন্যতম উদাহরণ।
  • latitude and longitude coordinates: ২৫.২৬৩০৬° N, ৫৫.২৯৭২২° E
  • মোট ভূমি এলাকা: ১,২৮৭.৫ বর্গ কিলোমিটার
  • ২০১৬ সালে দুবাইয়ের GDP ছিল USD ১০৮ বিলিয়ন।

দুবাইয়ের ইতিহাস এবং আধুনিক উন্নয়নের মেলবন্ধনই আজ এই শহরের গৌরবময় পরিচয়ের মূল অন্তরায়।

দুবাইয়ের জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ

বিশ্বের চতুর্থ জনপ্রিয়তম পর্যটন গন্তব্য হিসেবে চিহ্নিত হওয়া দুবাইয়ের রয়েছে অসাধারণ কিছু পর্যটন আকর্ষণ, যা ভ্রমণপিপাসুদের মুগ্ধ করে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল বুর্জ খলিফা, দুবাই মল এবং পালম জুমেইরা।

বুর্জ খলিফা

বুর্জ খলিফা পৃথিবীর সর্বোচ্চ ভবন হিসেবে পরিচিত। এর উচ্চতা ২,৭১৭ ফুট এবং এতে রয়েছে ১৬০টি তলা। ৫৪টি এলিভেটর রয়েছে, যা প্রায় প্রতি ঘণ্টায় ৪০ মাইল বেগে চলতে পারে। এখান থেকে পুরো দুবাই শহরের অপার সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়।

আরও পড়ুনঃ  রাজশাহী জেলা: উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল

দুবাই মল

দুবাই মল শুধু একটি শপিং মল নয়, বরং এটিকে দুবাইয়ের সবচেয়ে বড় বিনোদন কেন্দ্র বলা যেতে পারে। প্রতি বছর প্রায় ৪,০০০ আবাসিক ইউনিট প্রাথমিক প্রক্রিয়ায় বিক্রি হয়। এখানে আপনি সোফিস্টিকেটেড ব্র্যান্ডের দোকান, ফ্যাশন শো, এবং সত্তুরোত্তম খানার রেস্তোরাঁ পাবেন।

পালম জুমেইরা

পালম জুমেইরা, বিশাল ও সুদৃশ্য আকৃতির একটি নির্জন দ্বীপ, এটি পৃথিবীর অন্যতম মানচিত্র আকর্ষণ হিসেবে খ্যাত। এখানে রয়েছে রিসোর্ট, অ্যাপার্টমেন্ট, থিম পার্ক, শপিং মল, হাসপাতাল এবং খেলাধুলার সুবিধা। অ্যাটলান্টিস, দ্য পাল্ম রিসোর্টটি হলিউড সেলিব্রিটিদের মাঝে জনপ্রিয় একটি জায়গা।

দুবাইয়ের সংস্কৃতি

দুবাইয়ের সংস্কৃতি তার বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠীর জীবনের প্রতিফলন। এই শহরটি তার স্বাগতিকদের প্রাচীন ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিক জীবনের মেলবন্ধন দিয়ে আকৃষ্ট করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ এখানে বাস করে, এবং তাদের খাদ্য ও সংস্কৃতিতে এই বহুজাতিক বৈচিত্ত্য বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়।

খাবার ও খাদ্য সংস্কৃতি

দুবাই খাদ্য সংস্কৃতি একটি সত্যিকারের বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা প্রদান করে। এখানে আপনি পাবেন ঐতিহ্যবাহী আরব খাবার যেমন মাচবুস, মানাকিস, এবং অন্যান্য মধ্যপ্রাচ্যের বিশিষ্ট পদ। এই শহরে রয়েছে বিভিন্ন দেশের রেস্টুরেন্ট, যেমন থাইল্যান্ড, ইতালি, ভারত, এবং চীনের খাবার। এছাড়া, দুবাইয়ের বিভিন্ন স্কাই হাই রেস্টুরেন্ট থেকেও মনমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন।

উৎসব ও অনুষ্ঠান

দুবাই উৎসব এবং অনুষ্ঠান উদযাপনে ব্যতিক্রমী। সবচেয়ে আলোচিত উৎসবগুলোর মধ্যে দুবাই শপিং ফেস্টিভ্যাল, দুবাই ফুড ফেস্টিভ্যাল, এবং দুবাই মিউজিক উইক উল্লেখযোগ্য। দুবাই খাদ্য উৎসবে বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত শেফরা তাদের কুকিং স্টাইল উপস্থাপন করেন। এছাড়া, এই শহরে ইসলামী সংস্কৃতির অনেক উৎসব যেমন ঈদ উল ফিতর এবং ঈদ উল আযহা বিশিষ্টভাবে উদযাপন করা হয়।

দুবাইয়ের জলবায়ু ও ভ্রমণের উপযুক্ত সময়

দুবাই ভ্রমণের সময় নির্বাচন করার আগে দুবাই জলবায়ু সম্পর্কে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ুর পরিবর্তন ও তাপমাত্রার ধরনের উপর ভিত্তি করে আপনার ভ্রমণের পরিকল্পনা করা উচিত। বিশেষ করে, দুবাইয়ে শীতকালই ভ্রমণের উত্তম সময়।

গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা

গ্রীষ্মকালে, যাত্রীরা দুবাইয়ের তাপ শিখর চাপিত তাপমাত্রা মোকাবিলা করতে হবে। জুন থেকে আগস্টের মধ্যে তাপমাত্রা প্রায় 47°C (116°F) পর্যন্ত পৌঁছায়, যা অত্যন্ত উচ্চ। এ সময়ের মধ্যে মূলত ইনডোর কার্যক্রম যেমন শপিং মল এবং ওয়াটারপার্ক গুলোতে সময় কাটানো সেরা। দুবাইয়ের গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা অত্যন্ত উত্তপ্ত হলেও শহরের অনেক ইনডোর আকর্ষণ এবং অন্যতম ফেস্টিভালগুলো যেমন “দুবাই সামার সারপ্রাইজেস” এই সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়, যা দর্শকদের জন্য আরও আনন্দদায়ক।

শীতকালীন ভ্রমণ

দুবাই ভ্রমণের সময় হিসেবে শীতকাল উত্তম, কারণ এই সময় তাপমাত্রা অনেকটাই আরামের মধ্যে থাকে। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাপমাত্রা 14°C (57°F) থেকে 24°C (75°F) এর মধ্যে থাকে। ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি মাসের মধ্যে দুবাই ভ্রমনের সময় বিভিন্ন ফেস্টিভ্যাল ও সবার আকর্ষণীয় স্থানগুলো খোলা থাকে যেখানে পর্যটকরা এনজয় করতে পারেন। ফেব্রুয়ারির মাসটি আবারও একটি চমৎকার সময় কারণ তাপমাত্রা সাধারণত 16°C (61°F) থেকে 26°C (79°F) এ থাকে, যা পর্বত ভ্রমণ এবং সাংস্কৃতিক নিদর্শন পরিদর্শনের জন্য একদম সঠিক। সামগ্রিকভাবে, শীতকালীন মাসগুলো হল দুবাই ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে ভালো সময়।

দুবাই ভ্রমণের সময় এবং আবহাওয়ার বিশেষ দিকগুলো মাথায় রেখে পরিকল্পনা করলে আপনার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা আরও মনোমুগ্ধকর হবে। তাই দুবাই জলবায়ু লক্ষ্য রেখে প্রস্তুতি নেয়াটা জরুরি।

আরও পড়ুনঃ  ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন

দুবাইয়ের শপিং কেন্দ্র ও বাজার

দুবাই বিশ্বের শপিং রাজধানী হিসেবে পরিচিত, তার নিরলস উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং অদম্য আকর্ষণের জন্য। এখানে ঐতিহাসিক সোক গুলো যেমন সোক আল বাহার এর পাশাপাশি আল্ট্রা মডার্ন শপিং মলগুলি পর্যটকদেরকে মুগ্ধ করে। চলুন দুবাইয়ের শপিং মল এবং বাজারগুলোর একটি বিস্তারিত ধারণা নেওয়া যাক।

দুবাই মল

দুবাই মল হলো পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম শপিং মল যা আনুমানিক ৫০টি ফুটবল মাঠের সমতুল্য এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে আছে। এতে ১২০০ এরও বেশি স্টোর রয়েছে যেখানে বিভিন্ন ধরনের পণ্য এবং বিলাসবহুল ব্র্যান্ডগুলি উপলব্ধ।

  • দুবাই মল এর আকর্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে বুর্জ খলিফা, বুর্জ খলিফার পাদদেশে থাকা দুবাই ফাউন্টেন, দুবাই অ্যাকোয়ারিয়াম এবং আন্ডারওয়াটার জু যেখানে থাকছে ১০ লাখ লিটার পানির ট্যাংক যা প্রায় ৩৩ হাজার জলজ প্রাণীর বাসস্থান।
  • এছাড়াও, দুবাই মল এ রয়েছে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ও বিনোদন কেন্দ্র যা পর্যটকদের ভ্রমণকে আরও আনন্দময় করে তোলে।

সোক আল বাহার

ইতিহাসের মর্মর ধ্বনি এবং আধুনিকতার ছোঁয়া মিলে যে স্থানের তৈরি সোক আল বাহার। এটি একটি ঐতিহ্যবাহী আরবিক বাজার যেখানে আধুনিক আর্কিটেকচারাল ডিজাইনের সাথে প্রচলিত বাজারের আকর্ষণ মিলে মিশে আছে।

  • সোক আল বাহার এ প্রায় ১০০টি শপ রয়েছে যেখানে স্থানীয় হস্তশিল্প, গয়না, অ্যান্টিক এবং অন্যান্য প্রাচীন এবং আধুনিক সামগ্রী পাওয়া যায়।
  • এছাড়া, এখানে প্রচুর কফি শপ এবং রেস্টুরেন্ট রয়েছে যা দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম।

দুবাইয়ের শপিং মল এবং সোক আল বাহার পর্যটক এবং স্থানীয়দের পূর্ণতায় মিলিয়ে দেয়, তাদের কেনাকাটার একটি চমৎকার অভিজ্ঞতা প্রদান করে।

দুবাইয়ের যানবাহন ব্যবস্থা

দুবাইয়ের উন্নত যানবাহন ব্যবস্থা শহরের যেকোন স্থানে চলাচল সহজতর এবং আরামদায়ক করে তুলেছে। মেট্রো এবং ট্যাক্সি সেবাই এখানকার প্রধান যানবাহন।

মেট্রো

দুবাই মেট্রো ২০০৯ সালে তাদের কার্যক্রম শুরু করে এবং বর্তমানে দুটি প্রধান লাইন নিয়ে গঠিত: রেড লাইন এবং গ্রীন লাইন। রেড লাইন ডাউনটাউন দুবাই, দুবাই মারিনা, বিজনেস বে, জুমেইরা লেকস টাওয়ার (JLT) এবং জেবেল আলী সহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকা অন্তর্ভুক্ত করে। অপরদিকে, গ্রীন লাইন দেইরা, আল রিগা, আল জাদ্দাফ এবং দুবাই হেলথ কেয়ার সিটি এলাকাগুলোকে সংযোজন করে। দ্রুত ভ্রমণের জন্য এটি গণ পরিবহণের একটি নির্ভরযোগ্য মাধ্যম। দুবাই মেট্রো প্রতিদিন প্রায় ৪:৩০ এএম থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলাচল করে, অতিরিক্ত সেবা প্রদান করে যানজটমুক্ত পরিবহণ প্রক্রিয়া পরিচালনা করে।

ট্যাক্সি সেবা

দুবাই ট্যাক্সি সেবা ২৪/৭ পরিচালিত একটি সুবিধা যা অত্যন্ত সুবিধাজনক ও সহজলভ্য। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই নির্ভরযোগ্য সেবাটির মাধ্যমে তাদের যাত্রা করে থাকে। ভাড়ার ক্ষেত্রে, দুবাই ট্যাক্সি সেবা প্রতি ট্রিপে AED ১২ থেকে AED ১৫ পর্যন্ত চার্জ করে। এছাড়াও, ট্যাক্সিগুলোতে এয়ার কন্ডিশনিং, জিপিএস এবং বিশেষ পরিষেবার জন্য লেডিস ট্যাক্সি ও নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য অ্যাক্সেসযোগ্য গাড়ি সুবিধা রয়েছে। রাস্তায় ট্যাক্সি তুলে নেওয়া, RTA স্মার্ট ট্যাক্সি অ্যাপ ব্যবহার, বা আরটিএ হটলাইনকে কল করে সেবাটি গ্রহন করা যায়।

দুবাইয়ে থাকার সুবিধা

দুবাইতে থাকার জন্য বিভিন্ন শ্রেণীর হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। উচ্চাভিলাষী রিসোর্ট থেকে বাজেট হোটেল পর্যন্তপুড়ে দেয়া হয়েছে। ভাড়া বাড়ির বিকল্পও আছে বিভিন্ন চাহিদার জন্য।

হোটেল ও রিসোর্ট

দুবাইতে আপনি পাবেন বিভিন্ন ধরনের দুবাই হোটেল এবং দুবাই রিসোর্ট। যারা বিলাসবহুল অভিজ্ঞতা খুঁজছেন তাদের জন্য রয়েছে পাঁচ-তারা দুবাই হোটেল যেমন, বুর্জ আল আরব, আটলান্টিস দ্য পাম। আবার যারা অর্থনৈতিকভাবে মানানসই বিকল্প খুঁজছেন তাদের জন্য রয়েছে অনেক বিট ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সহ তিন ও চার তারা হোটেলও।

আরও পড়ুনঃ  ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স - বাংলাদেশের অন্যতম এয়ারলাইন্স

ভাড়া বাড়ির বিকল্প

দুবাইতে ভাড়া বাড়ির বিকল্প পাওয়া যায় অনেক। বিভিন্ন স্তরের বাসা বা ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকা যায়। দীর্ঘমেয়াদি থাকার জন্য ভাড়া বাড়ি একটি চমৎকার বিকল্প এবং এটি সাধারণত ট্যাক্স ফ্রি হয়। ভাড়া বাড়ির সুবিধা হিসেবে স্থায়ী বসবাস অধিক ব্যয়বহুল হোটেলের থেকে সাশ্রয়ী হতে পারে।

দুবাইয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা

দুবাই বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ শহর হিসেবে খ্যাত। এটি নিশ্চিত করতে দুবাই পুলিশ এবং উন্নত প্রযুক্তির সুরক্ষা ব্যবস্থা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকরী সুফলদানে শহরটি সোফিস্টিকেটেড সিসিটিভি সিস্টেম এবং জরুরি যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে।

পুলিশ ও সুরক্ষা

দুবাই পুলিশ শহরটির প্রতিটি কোণায় কড়া নজরদারি রাখে। দুবাই পুলিশ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সক্রিয়। শহরের পুলিশ হিসেবে এদের রাষ্ট্রীয় প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সিসিটিভি সিস্টেম ব্যবহার করে, যা ২৪/৭ নজরদারি নিশ্চিত করে মানসিক শান্তি প্রদান করে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতিটি স্তর নিয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং প্রতিটি এলাকা সঠিকভাবে কভারেজের জন্য নিয়মিত পর্যালোচনা করা হয়।

জরুরি যোগাযোগ ব্যবস্থা

দুবাইয়ের জরুরি যোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিক এবং উন্নত। ৯৯৯ এইমারজেন্সি নম্বরটি আপৎকালীন সেবার জন্য সর্বদা চালু থাকে। অধিকন্তু, প্রতিটি প্রধান সুরক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে চলে, যার মধ্যে সেরা সিসিটিভি সাপ্লায়াররা নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ পরিষেবা প্রদান করে। উচ্চমানের ক্যামেরা স্থাপনা ও রেগুলার মেইনটেন্যান্স চেক নিশ্চিত করা হয়। এ ব্যবস্থাগুলি সঠিকভাবে পরিচালিত হলে, নিরাপত্তার মানোন্নতি ঘটে এবং জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত সাড়া দেয়া যায়।

FAQ

দুবাই ভ্রমণের জন্য সেরা সময় কোনটি?

নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস দুবাই ভ্রমণের জন্য সর্বোত্তম সময়। এই সময়ে আবহাওয়া শীতল ও মনোরম থাকে, যা পর্যটকদের জন্য আদর্শ।

দুবাইতে কী কী দেখার জায়গা আছে?

দুবাইতে অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হল বুর্জ খলিফা, দুবাই মল, এবং পালম জুমেইরা। এছাড়াও আরও বহু দর্শনীয় স্থান ও আকর্ষণ রয়েছে।

দুবাইয়ের বিভিন্ন পর্যটন স্পট সম্পর্কে কী তথ্য জানা উচিত?

দুবাইয়ে বুর্জ খলিফা বিশ্বের সর্বোচ্চ অট্টালিকা হিসেবে পরিচিত। দুবাই মল বিশ্বের বৃহত্তম শপিং মল এবং পালম জুমেইরা কৃত্রিম দ্বীপের অনন্য উদাহরণ।

দুবাইয়ের খাবার ও খাদ্য সংস্কৃতি কেমন?

দুবাইতে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পদের সম্ভার রয়েছে। এ শহরের খাবারের মধ্যে স্থানীয় আমিরাতি, ভারতীয়, লেবানিজ, এবং ইউরোপীয় খাদ্য উপভোগ করা যায়।

দুবাইয়ে কী কী উৎসব ও অনুষ্ঠান পালিত হয়?

দুবাইতে বিভিন্ন উৎসব ও অনুষ্ঠান পালিত হয়, যেমন দুবাই শপিং ফেস্টিভ্যাল, দুবাই ফুড ফেস্টিভ্যাল এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া ইভেন্ট।

দুবাইতে শপিংয়ের জন্য সবচেয়ে ভালো স্থান কোনটি?

দুবাই মল এবং সোোক আল বাহার দুবাইয়ের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ শপিং কেন্দ্র এবং বাজার। এখানে পণ্যের বৈচিত্র্য ও মান বেশ উচ্চ।

দুবাইয়ের মেট্রো ও ট্যাক্সি সেবার সুবিধা কী কী?

দুবাইয়ের মেট্রো ব্যবস্থা অত্যাধুনিক এবং সময়মতো চলে। এছাড়া, ট্যাক্সি সেবা সহজলভ্য এবং সুবিধাজনক।

দুবাইতে থাকার জন্য কী কী ব্যবস্থা আছে?

দুবাইতে বিভিন্ন শ্রেণীর হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে, উচ্চাভিলাষী রিসোর্ট থেকে শুরু করে বাজেট হোটেল পর্যন্ত। এছাড়া, ভাড়া বাড়ির বিকল্পও রয়েছে।

দুবাইয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন?

দুবাই অন্যতম নিরাপদ শহর। এখানকার পুলিশ বিভাগ এবং জরুরি যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নত এবং পর্যটকদের সুরক্ষায় সচেষ্ট।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button