প্রীতম হাসান: বাংলাদেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী
প্রীতম হাসান, বাংলাদেশের গায়ক এবং পপ সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত। বাংলাদেশি সঙ্গীত পরিচালক, কণ্ঠশিল্পী, মডেল ও অভিনেতা হিসেবে প্রীতম হাসানের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে। তার গাওয়া জনপ্রিয় গান “মা লো মা” YouTube-এ ১০০ মিলিয়ন ভিউস অতিক্রম করেছে এবং পুনরায় সৃষ্ট সংস্করণটি দেখা হয়েছে দুই মিলিয়নবার। এছাড়া, সিনেমা “উরা ধুরা” তে প্রীতমের গাওয়া গানটি ২৪ মিলিয়ন ভিউস পেয়েছে, যেখানে শাকিব খান এবং মিমি চক্রবর্তীর পারফরম্যান্স প্রশংসিত হয়েছে।
এই সাফল্যের সাথে প্রীতম হাসান তার ভক্তদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং তাদের ভালোবাসা ও সমর্থনকে তার সৃষ্টির মহৎ প্রেরণা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। প্রীতমের মতে, গান সৃষ্টি করার সময় তার মনোযোগ পুরোপুরি মজার দিকে এবং তা যে আসলেই আনন্দদায়ক তা নিশ্চিত করার উপর থাকে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলা গানকে তুলে ধরার অভিপ্রায়ে তিনি ভবিষ্যতে আরও নতুন প্রচেষ্টা চালানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
প্রারম্ভিক জীবন
প্রীতম হাসান ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন এবং তিনি ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতের প্রতি গভীর অনুরাগ অনুভব করতেন। তাঁর বাবা খালিদ হাসান মিলু, একজন প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী এবং তার মা ফাতেমা হাসান পলাশ, যার নেপথ্য প্রেরণা প্রীতমের শৈশবকালের বিভিন্ন দিককে প্রভাবিত করেছে। প্রীতম হাসানের পারিবারিক জীবন অত্যন্ত সুরেলা এবং সঙ্গীতমুখী ছিল, যা তাঁর ভবিষ্যতের সঙ্গীত জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে।
শৈশব এবং পরিবার
প্রীতম হাসানের শৈশব শুরু হয় ঢাকায়, যেখানে তিনি প্রায়ই তার বাবার সাথে সঙ্গীতের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিতেন। প্রীতমের বাবা খালিদ হাসান মিলুর পথ নির্দেশনায়, তিনি শৈশব থেকেই সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তার পরিবার তাকে সবসময় উৎসাহিত করেছে এবং তার মা ফাতেমা হাসান পলাশ ছিলেন তার মজবুত সমর্থকের অন্যতম। প্রীতম হাসানের পারিবারিক জীবন খুবই সঙ্গীতমুখী ছিল এবং তার পরিবারের প্রতিটি সদস্য সংস্কৃতির ধারক ও বাহক ছিলেন।
শিক্ষা জীবন
প্রীতমের শিক্ষাজীবন শুরু হয় ঢাকার গুলশান কমার্স কলেজ থেকে, যেখানে তিনি তার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেছেন। এরপরে, তিনি সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন যেখানে তিনি উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেন। যদিও শৈশবে তিনি আর্মি অফিসার হওয়ার কথা বলতেন, তবে পরে মিউজিকের প্রতি ঝুঁকে পড়েন। শিক্ষা জীবনে প্রীতম সবসময়ই সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহী ছিলেন এবং এই আগ্রহই তাকে বাংলাদেশে অন্যতম জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
সঙ্গীতের সাথে প্রথম পরিচয়
প্রতিষ্ঠিত গায়ক প্রীতম হাসানের সঙ্গীত জীবন বহু অবিষ্কার ও চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে। মাধ্যমিক শেষ করার পর মিউজিক কম্পোজিশনে হাতে খড়ি হয় প্রীতমের। প্রীতমের প্রতিভা এবং কঠোর পরিশ্রম তাকে বাংলা সঙ্গীত জগতে একটা সুপরিচিত নাম করে তুলেছে। তার প্রথম সঙ্গীত জীবনের প্রক্রিয়া সঙ্গীতশিল্পী হাবিবের সান্নিধ্যে গতি পায়, যিনি প্রীতমের প্রতিভাকে বুঝে তার গানগুলোকে একটি নতুন মাত্রায় এনেছেন।
প্রথম প্রচেষ্টা
প্রথম দিকে, প্রীতম সঙ্গীতের বিভিন্ন দিক নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেন। তার প্রথম উদ্যোগগুলোর মধ্যে, ‘দেওরা’ ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ, যে গানে প্রীতম তার দক্ষতার স্বাক্ষর রাখেন। এই গানটি ১২ লাখেরও বেশি বার দেখা হয়েছে যা তার জনপ্রিয়তার এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। সঙ্গীতে প্রীতমের আগ্রহ বাউল এবং লোক গীতির প্রতি লক্ষ্যণীয়, যা তার গানের মধ্যে স্পষ্ট প্রতিফলিত হয়।
হাবিবের সান্নিধ্য
পরবর্তী পর্যায়ে প্রীতমের সঙ্গীত জীবন প্রবাহিত হয় প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী হাবিব ওয়াহিদের সাথে কাজ করার সময়। হাবিবের সান্নিধ্য প্রীতমের কণ্ঠ এবং সুরকে একটি নতুন উচ্চতায় উন্নীত করে, যার ফলে তার গানগুলি দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। ‘ভবের পাগল’ এবং ‘দেওরা’ গানগুলি তার সঙ্গীত জীবনের এক একটি সেরা উপহার, যা শ্রোতাদের মন জয় করে নিয়েছে। এছাড়াও ‘কোক স্টুডিও বাংলা’র ইউটিউব চ্যানেলে অনন্য রেকর্ড সৃষ্টি করা গানগুলিও প্রীতমের প্রতিভার প্রতিফলন।
প্রিতম হাসানের সঙ্গীত জীবনের বিভিন্ন অধ্যায়ে হাবিবের সান্নিধ্য তার সঙ্গীত জীবনের মোড় পরিবর্তন করেছে। এ সাফল্যের পেছনে একটি বড় অবদান রাখা ব্যক্তিত্ব হিসেবে হাবিবকে ধন্যবাদ এবং সম্মান জানাতে হয়।
কর্মজীবনের শুরু
প্রীতম হাসানের কর্মজীবন সঙ্গীত জগতে সুনাম কুড়িয়েছে, যা শুরু হয়েছিল তার প্রথম গানের মাধ্যমে। প্রীতম হাসানের হিট গানগুলো তাকে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
প্রথম গান এবং সাফল্য
প্রীতমের প্রথম সুপরিচিত গান “খোকা” ছিল যা তাকে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের মনোনয়ন এনে দেয়। এই গানটি প্রকাশের পরপরই তিনি সঙ্গীতপ্রেমীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেন। প্রথম গানের তুমুল জনপ্রিয়তা তার কর্মজীবনের একটি কঠিন ভিত্তি গড়তে সাহায্য করে। প্রীতম হাসানের কর্মজীবন এভাবেই ধীরে ধীরে সাফল্যের পথে এগিয়ে যায়।
গানের বিবর্তন
প্রীতম হাসানের হিট গানগুলো সময়ের সাথে সাথে আরো উদ্ভাবনী এবং প্রশংসনীয় হয়ে উঠেছে। তিনি চলচ্চিত্র ‘দেবী’ এবং অন্যান্য সিনেমার জন্য গান সুর করেন, যা তার সঙ্গীতের বিবর্তনে একটি নতুন ধারা যোগ করে। তার গানগুলো তে একদিকে যেমন ঐতিহ্যবাহী সুরের পরম্পরা থাকতে দেখা যায়, ঠিক তেমনই আধুনিকতার ছোঁয়াও স্পষ্ট। এই বৈচিত্র্যই প্রীতম হাসানের কর্মজীবনকে আরো অনন্য করে তুলেছে।
অভিনয় জীবন
প্রীতম হাসান শুধুমাত্র সঙ্গীতে দক্ষ নন, তেমনি অভিনয় জগতেও তার দক্ষতা প্রমাণিত। প্রীতম হাসানের অভিনয় দক্ষতা অগণিত নাটক ও চলচ্চিত্রে প্রশংসিত হয়েছে। বিভিন্ন কাহিনী চরিত্রে অভূতপূর্ব ভাবে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা তাকে সবার প্রিয় করেছে।
নাটক এবং চলচিত্রে কাজ
প্রথমে নাটকে তার অভিনয়ের যুগ শুরু হয়েছিল এবং পরে বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন। “রাজনীতি”, “ভ্রমর”, এবং “অস্তিত্ব” চলচ্চিত্রগুলোতে প্রীতম হাসানের অভিনয় বেশ উল্লেখযোগ্য। ২০২৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত “তুফান” একটি ক্রাইম থ্রিলার চলচ্চিত্র, যেটি ১৪৫ মিনিট দীর্ঘ এবং ৫৬ কোটি টাকার বাজেটে নির্মিত হয়েছিল। চলচ্চিত্রটি বাংলা ভাষায় প্রকাশিত হয় এবং এটি শুধুমাত্র বাংলাদেশে নয়, পাকিস্তানেও মুক্তি পায়। “তুফান” চলচ্চিত্রে প্রীতম হাসান একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন, যা তার অভিনয় প্রতিভাকে আরও এক ধাপে উপরে নিয়ে যায়।
বিশেষ প্রাপ্তি
২০২২ সালে, প্রীতম হাসান “দেবী” চলচ্চিত্রে তার অসাধারণ অভিনয়ের জন্য মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও, তার বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি বিভিন্ন পুরস্কার ও স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। প্রীতম হাসানের সিনেমা ও নাটকে অভিনয়ের প্রতিভা তাকে অনবদ্য স্থানে স্থান করে দিয়েছে।
উল্লেখযোগ্য কাজ এবং প্রকল্প
প্রীতম হাসান তার গানের মতোই চলচ্চিত্র ও টিভি ধারাবাহিকে সফলতার সাথে কাজ করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য সিনেমা ও ধারাবাহিকের কাজ তাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে। প্রীতম হাসানের প্রকল্প ও প্রীতম হাসানের ধারাবাহিক সম্পর্কে আলোচনা করা হওক।
চলচ্চিত্র
প্রীতম হাসানের প্রকল্প বলতে গেলে তার কিছু জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের নাম উঠে আসে। ‘রাজনীতি’, ‘ভ্রমর’ এবং ‘অস্তিত্ব’ তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমা। প্রতিটি সিনেমায় তিনি তার অভিনয় দক্ষতা ও সঙ্গীত প্রতিভার পরিচয় দিয়ে দর্শকদের মন জয় করেছেন। ‘রাজনীতি’ সিনেমাটি একজন বিচিত্র রাজনৈতিক নেতার জীবনের গল্প বলে, যেখানে প্রীতম হাসান অসাধারণ অভিনয় করেছেন। ‘ভ্রমর’ ও ‘অস্তিত্ব’ সিনেমার প্লট ও গানগুলি দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
টিভি ধারাবাহিক
প্রীতম হাসানের ধারাবাহিক কাজ ফিল্মের থেকে কম নয়। তার হাতে গড়ে উঠেছে অনেক জনপ্রিয় টিভি সিরিজ। ‘ভালবাসার এক ছবি’, ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ এবং ‘ঢোল বাজে’ তার উল্লেখযোগ্য ধারাবাহিক। এসব ধারাবাহিকে তার অভিনয় ও গানের সমন্বয় দর্শকদের বারবার মুগ্ধ করেছে। বিশেষত, ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ ধারাবাহিকটি বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ধারাবাহিকের প্রতিটি পর্বে প্রীতম হাসানের চলমান প্রকল্প উঠে আসে, যা দর্শকদের মন জয় করেছে। প্রীতম হাসানের প্রকল্প ও প্রীতম হাসানের ধারাবাহিক তার প্রতিভার সেরা উদাহরণ।
সামগ্রিকভাবে, প্রীতম হাসান চলচ্চিত্র ও টিভি ধারাবাহিকের মাধ্যমে তার প্রতিভাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন। তার কাজগুলো সবসময়ই দর্শকদের কাছে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। প্রীতম হাসানের প্রকল্প ও প্রীতম হাসানের ধারাবাহিক আমাদের সামনে নতুন নতুন সৃষ্টির সম্ভাবনা নিয়ে আসে।
বৈচিত্র্যময় সঙ্গীত
প্রীতম হাসান তাঁর বৈচিত্র্যময় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গীত জগতে এক বিশেষ স্থান দখল করেছেন। তাঁর সঙ্গীতের প্রতিভা এবং বৈচিত্র্যকে তুলে ধরেন। প্রীতম হাসানের পপ সঙ্গীত এবং লোক গীতি সমানভাবে জনপ্রিয় এবং প্রশংসিত।
পপ এবং রক
প্রীতম হাসানের পপ সঙ্গীত গানবাজনা জগতে নতুন যুগের সূচনা করেছে। তাঁর পপ গানের মিশ্রণ, সুর আর লিরিক্সের মাধ্যমে প্রীতম তরুণ প্রজন্মের মন জয় করেছেন। পপ গানের পাশাপাশি তাঁর রক সঙ্গীতেও রয়েছে চমৎকার মেলোডি ও শক্তিশালী বার্তা, যা শ্রোতাদের অনেকটা আকর্ষণ করেছে।
লোক গীতি
প্রীতম হাসানের লোক গীতি প্রাচীন বাংলার সুর ও সঙ্গীতকে আধুনিকভাবে পুনরুজ্জীবিত করেছে। তাঁর লোক গীতির মধ্যে প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্য এবং বর্তমান প্রজন্মের অনুভূতি একসাথে মিশে যায়। প্রীতমের লোক গীতি তাই অনেকের কাছে সময়ের এক অনন্য সংযোগ ঘটে।
প্রিয়তম হাসান
ব্যক্তিগত পরিচিতির মধ্যে প্রীতম হাসান অন্যতম এক উদাহরণ। তাঁর জন্ম ঢাকায় ঘটে, এবং তিনি প্রতিদিনের জীবনে অত্যন্ত সহজ-সরল মানুষ হিসেবে পরিচিত। তবে তাঁর ব্যক্তিগত পরিচিতি শুধুমাত্র এই পরিচয়েই সীমাবদ্ধ নয়। প্রীতম হাসানের শখ সম্পর্কে জানা যায় যে তিনি খুবই সৃজনশীল, তিনি নিত্য নতুন সুর এবং গানের ভাবনা নিয়ে ভাবতে ভালোবাসেন।
তাঁর ভাই প্রতীক হাসানও একজন গায়ক, যা তাঁর সংগীতে আসার কারণগুলির মধ্যে অন্যতম। প্রীতম হাসানের সংগীতে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল মুঠোফোনের একটি জিঙ্গেলে গান গাওয়ার মাধ্যমে, যা হাবিব কর্তৃক তৈরি করা হয়েছিল। এরপর তাঁর জীবন পাল্টে যায় ‘আসো মামা হে’ গানটির মাধ্যমে।
প্রিয়তম হাসানহিসেবে তিনি অনেক ধারাবাহিক সংগীত গান করেছেন, যেমন ‘লোকাল বাস’, ‘জাদুকর’, ‘রাজকুমার’, এবং ‘বেয়াইন সাব’। এই গানগুলো তাঁর ক্যারিয়ারে একেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রকৃতপক্ষে, তাঁর সুরের যাদুকরী যথার্থতা তাঁকে অন্যান্যরা থেকে আলাদা করে তুলেছে।
অভিনয়ে তিনি প্রথম নাটক ‘ইমোশনাল ফুল’ এর মাধ্যমে প্রবেশ করেন। উল্লেখযোগ্য হলো তাঁর অনুরোধে নাটকটি ‘নুহাশ হুমায়ূন’ পরিচালিত হয়েছে। প্রীতম হাসানের শখ সম্পর্কে যদি কথা বলতে হয়, তবে বলা যায় যে তিনি অভিনয় ও সংগীত বিষয়ক নানা নতুন প্রকল্প নিয়ে ভাবতে পছন্দ করেন। তাঁর এই শখগুলো তাঁকে সৃজনশীলতা এবং স্বকীয়তার নতুন মাত্রা দিয়েছে।
প্রীতম হাসানের সংগীত জীবনের বড় সুযোগ আসে ‘আসো মামা হে’ গানটির মাধ্যমে। এরপর থেকেই তার জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া হয়েছে। তাঁর সুরের সৌন্দর্য উপভোগ করার ইচ্ছা এবং আন্তর্জাতিক সঙ্গীতে তাঁর স্বপ্ন তাঁকে সবসময় সামনে দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
এই ছেলে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন ধারা ও শৈলীতে গান তৈরি করতে ব্যস্ত থাকেন। এ কারণে, ব্যক্তিগত পরিচিতি যদি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা হয়, তবে স্পষ্ট হয়ে উঠে যে, প্রীতম হাসানের শখ এবং অনুসন্ধিৎসা তাঁকে আরো অনেক দূর নিয়ে যাবে।
পারিবারিক জীবন
প্রিয়তম হাসান বাংলাদেশের একজন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী শিল্পী, যার সুরেলা কণ্ঠে মুগ্ধ হয়েছে অসংখ্য শ্রোতা। গান, অভিনয় এবং মডেলিংয়ে তার অভূতপূর্ব সফলতা তাকে একটি পরিচিত মুখে পরিণত করেছে। তার ব্যক্তিগত জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায় হল তার বিবাহ।
শেহতাজ মনিরা হাশেমের সাথে বিবাহ
২০২২ সালের ২৮ অক্টোবরে প্রীতম হাসানের বিবাহ হয় চিত্রনায়িকা এবং মডেল শেহতাজ মনিরা হাশেমের সাথে। তাদের বিবাহের আসরটি ছিল এক ভিন্ন ধারার এবং সৌন্দর্য্যে মুগ্ধকর। প্রীতম হাসানের বিবাহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিল অনেক সেলিব্রিটি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা, যা এ অনুষ্ঠানের গৌরব বৃদ্ধি করেছিল।
একত্রিত জীবন
বিবাহের পর থেকেই প্রীতম এবং শেহতাজ মনিরা হাশেম একত্রিত জীবনে সুখী সময় কাটাচ্ছেন। তারা বারিধারা, বসুন্ধরায় নিজ পরিবারের সাথে সুখী জীবন গড়ে তুলেছেন। এই দম্পতি প্রায়ই সামাজিক মিডিয়াতে তাদের সুন্দর মুহূর্তগুলি শেয়ার করেন, যা তাদের ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক প্রশংসিত হয়।
সামাজিক মিডিয়া উপস্থিতি
প্রীতম হাসান তার সামাজিক মিডিয়া উপস্থিতি দ্বারা বিশাল অনুসারী গড়ে তুলেছেন। তার প্রতিভা এবং ব্যক্তিত্বের মিশ্রণে প্রীতম হাসান অনলাইনে অন্যতম জনপ্রিয় মুখ হয়ে উঠেছেন। তিনি নিরলসভাবে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে তার নতুন গান, কনসার্ট, এবং ব্যক্তিগত জীবনের আপডেট শেয়ার করে থাকেন।
ইউটিউব এবং ফেসবুক
প্রীতম হাসানের ইউটিউব চ্যানেলটি তার সঙ্গীতজীবনের জন্য অন্যতম শক্তিশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। এখানে তিনি নিয়মিত তার নতুন মিউজিক ভিডিও, লাইভ পারফরমেন্স এবং ফ্যানদের সাথে ভিডিও শেয়ার করেন। ফেসবুকেও তার ভক্তের সংখ্যা নিতান্তই কম নয়; তিনি এখানে তার প্রতিদিনের জীবনের মুহূর্তগুলো শেয়ার করেন যা তার ফ্যানদের সাথে যোগাযোগে বড় ভূমিকা রাখে।
ইনস্টাগ্রাম এবং টুইটার
প্রীতম হাসানের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি ভিজ্যুয়াল কনটেন্টের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয়। প্রীতম হাসানের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে নিয়মিত ফটো এবং ভিডিও পোস্ট করে তিনি তার সৃজনশীলতা এবং স্টাইল শেয়ার করেন। টুইটারে তিনি তার মতামত প্রকাশ এবং বিভিন্ন ইভেন্ট সম্পর্কে টুইট করেন, যা তার ভক্তদের সাথে আরও শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি করতে সহায়ক।
পুরস্কার এবং স্বীকৃতি
প্রীতম হাসান বাংলাদেশের সঙ্গীত এবং অভিনয় জগতে তার অসামান্য প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছেন বহুবার। তার কাজের জন্য প্রায়ই তিনি নানা পুরস্কার এবং স্বীকৃতি পেয়ে থাকেন। বিশেষত, সেরা গায়ক এবং অভিনেতা হিসাবে প্রীতম হাসান মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার জেতেন, যা তার কর্মজীবনে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসাবে ধরা হয়।
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার বাংলাদেশের অন্যতম সম্মানিত পুরস্কার সমাজে, যা সাংস্কৃতিক ও বিনোদন ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদান রাখা ব্যক্তিদের সম্মানিত করে। প্রীতম হাসান তার গানের গভীরতা এবং অভিনয়ের দক্ষতার জন্য এই পুরস্কার অর্জন করেন। সঙ্গীত থেকে শুরু করে নাটক এবং চলচ্চিত্রে তার অসাধারণ পারফরম্যান্স তাকে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারের প্রাপক করে তোলে।
অন্যান্য অর্জন
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ছাড়াও প্রীতম হাসানের পুরস্কার এবং প্রীতম হাসানের স্বীকৃতি দীর্ঘ এবং বৈচিত্র্যময়। তিনি নানা আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কৃত হয়েছেন। তারচিত্তাকর্ষক সংগীত সৃষ্টির জন্য তিনি অনেক প্রথম সারির সংগীত পুরস্কার জিতেছেন। নাটক ও চলচ্চিত্রেও অসামান্য অবদান রাখায় তিনি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। তারকথা বলা দীপ্তিময় ক্যারিয়ার দেশ-বিদেশে তার নামে সম্মান ও গৌরব বৃদ্ধি করেছে।