ক্রিকেট বিশ্বকাপের মজাদার মুহূর্ত ও ইতিহাস

ক্রিকেট বিশ্বকাপ ইতিহাস একটি বিস্তৃত অনুশীলন যা অনেক স্মৃতিময় মুহূর্ত এবং অবিস্মরণীয় ঘটনা দ্বারা ভরা। ১৯৭৫ সালে প্রথম বিশ্বকাপ আসরের আয়োজন করে, যা ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয় করে। এরপরে ১৯৭৯ সালে আবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ট্রফি ধরে রাখতে সক্ষম হয় যখন তারা ইংল্যান্ডকে হেরে দেয়। অন্যদিকে, ১৯৮৩ সালে ভারতের কৌতুকভরা জয়ে ক্রিকেট বিশ্বকাপ একটি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করে, যেখানে ভারত ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পরাজিত করে তাদের প্রথম শিরোপা জিতে নেয়।

পরবর্তী বিশ্বকাপগুলোতে বিভিন্ন দল তাদের দক্ষতা প্রদর্শন করেছে। ১৯৮৭ সালে অস্ট্রেলিয়া প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয় করে এবং ১৯৯২ সালে পাকিস্তান তাদের প্রথম শিরোপা জিতে নেয় ইমরান খানের নেতৃত্বে। ১৯৯৯ সালে আবার অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ জয়ী হয় এবং ২০১১ সালে ভারত তাদের দ্বিতীয় শিরোপা জিতে নেয় শচীন টেন্ডুলকারের সাফল্যে। সর্বশেষ, ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া তাদের পঞ্চম শিরোপা জিতে নেয় এবং ২০১৯ সালে ইংল্যান্ড একটি রোমাঞ্চকর ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে পরাজিত করে শিরোপা অর্জন করে।

Contents show

১৯৭৫ সালে বিশ্বকাপের অভিষেক

১৯৭৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডে আয়োজন করা হয়, যা শুরু হয় ৭ জুন এবং শেষ হয় ২১ জুন। এই টুর্নামেন্টে মোট ১৫টি ম্যাচ খেলা হয়েছিল এবং প্রতিটি দল ৬০ ওভার করে খেলেছিল। আগের ১৮টি একদিনের ম্যাচের তুলনায় এটি ছিল একটি বিশেষ আকর্ষণ।

এই বিশ্বকাপে ভারতের সুনীল গাভাস্কার একটি স্মরণীয় পারফরম্যান্স দেখান যেখানে তিনি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে মাত্র ৩৪ রান করেন। এতে দর্শকদের মধ্যে প্রবল ক্ষোভ সৃষ্টি হয় এবং একজন দর্শক তার লাঞ্চ একটি ভারতীয় ওপেনারের পায়ে নিক্ষেপ করে।

১৯৭৫ বিশ্বকাপের শীর্ষ দলগুলো ছিল গ্রুপ এ থেকে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড, এবং গ্রুপ বি থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়া। এই চারটি দল সেমিফাইনালে উত্তীর্ণ হয়।

ভারত এই বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো একটি ম্যাচ জয় লাভ করে, যেখানে তারা পূর্ব আফ্রিকাকে পরাজিত করে। সেই ম্যাচে মাদন লাল এবং সৈয়দ আবিদ আলী অসামান্য বোলিং ফিগার দেখান।

১৯৭৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপে গ্লেন্ডন টার্নার সর্বাধিক রানের অধিকারী হন, যেখানে তিনি মোট ৩৩৩ রান করেন। এছাড়াও গ্যারি গিলমোরের সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৬/১৪ এর চমৎকার বোলিং ফিগার বেশ আলোচিত হয়।

টুর্নামেন্টটির ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং অস্ট্রেলিয়া মুখোমুখি হয়, যেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৯২ রানের লক্ষ্য পূরণ করে বিজয়ী হয়। ক্যাপ্টেন ক্লাইভ লয়েডের অসাধারণ শতক এই জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

প্রথম বিশ্বকাপের এই অসামান্য ইতিহাস এবং লর্ডসে প্রথম বিশ্বকাপ আয়োজনের স্মৃতি ক্রিকেট বিশ্বে অনন্যভাবে বিরাজমান।

আরও পড়ুনঃ  ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা: স্পেনের সেরা ক্লাব

১৯৮৩ বনে ভারতীয় দলের জয়

১৯৮৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে ভারতের প্রথম বিজয়ের গল্পটি সত্যিই অনবদ্য। এই প্রতিযোগিতার শুরু ৯ জুন থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে মোট ৮টি দল অংশগ্রহণ করে এবং ২৭টি ম্যাচ খেলা হয়।

কপিল দেবের অবিস্মরণীয় ইনিংস

কপিল দেবের ঐতিহাসিক ইনিংস যে ভারতীয় দলকে তাদের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ে নিয়ে আসে, তা ক্রিকেট ভক্তদের স্মৃতিতে চিরস্থায়ী হয়ে রয়েছে। ১৯৮৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে কপিল দেবের সাহসী নেতৃত্ব এবং তার অনবদ্য ব্যাটিং প্রায় একক প্রচেষ্টায় ভারতীয় দলকে জয়ের পথে নিয়ে যায়। তার এই অসাধারণ ইনিংসের মাধ্যমে ভারতীয় দল তাদের প্রথম বিশ্বকাপ ট্রফি অর্জন করে, যা আজও ক্রিকেট প্রেমীদের মধ্যে গভীর প্রেরণার উৎস।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হ্যাটট্রিকের আশার সমাপ্তি

অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা এবং অন্যান্য দলের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ঐকান্তিকভাবে হ্যাটট্রিক জয়ের লক্ষ্য পূরণের দিকে আগ্রসর হলেও ভারতীয় দলের অসাধারণ প্রদর্শন তা প্রতিহত করে। ক্রিকেট ইতিহাসে ১৯৮৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনালে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্বপ্নের সমাপ্তি এলো ভারতের বিপরীতে ৪৩ রানে হারের মাধ্যমে। এই জয় শুধু কপিল দেব ইনিংসের জয় ছিল না, বরং ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা।

পাকিস্তানের ১৯৯২ সালের ঐতিহাসিক জয়

১৯৯২ ক্রিকেট বিশ্বকাপ স্মরণীয় এক অধ্যায় হয়ে আছে পাকিস্তানের জন্য। প্রথম পাঁচটি ম্যাচের পর মাত্র তিন পয়েন্ট নিয়ে যখন পাকিস্তান দল সেমিফাইনালে প্রবেশ করে, তখন অনেকেই তাদের সম্ভাবনা নিয়ে সন্দেহ করেছিলেন। কিন্তু ইমরান খানের অবিচল নেতৃত্বে এবং দলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়।

ইমরান খানের ম্যাজিক্যাল নেতৃত্ব

ইমরান খান নেতৃত্ব নিয়ে খেলোয়াড়দের মনোবল বৃদ্ধির পাশাপাশি সমগ্র দলকে একত্রিত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। তার অটুট উদ্যম এবং কৌশলগত পরিবর্তনগুলি পাকিস্তানি দলকে বিপর্যয়ের মুহূর্তগুলোতেও এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালে বল হাতে ম্যাজিক্যাল স্পেল দিয়েছিলেন মজিদ আমির, যার মাধ্যমে পাকিস্তানকে জয়ের দরজায় পৌঁছে দেন ইমরান খান নেতৃত্বাধীন দল।

ফাইনাল ম্যাচের অবিশ্বাস্যতা

১৯৯২ ফাইনাল একটি অবিশ্বাস্য ম্যাচ ছিল যেখানে পাকিস্তানের দল নিজেদের সম্পূর্ণ মেলে ধরে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে ইমরান খানের ধৈর্যশীল শতরান এবং ওয়াসিম আকরামের অসাধারণ বোলিং পারফরম্যান্স পাকিস্তানের জয়কে নিশ্চিত করে। সেই ম্যাচে আকরাম নেওয়া ১৮টি উইকেটের মধ্যে ব্যাপক অবদান রাখেন যা পাকিস্তানকে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের শিরোপা এনে দেয়।

পাকিস্তানের ১৯৯২ ফাইনাল বিশ্বকাপটি শুধু একটি ট্রফি নয়, পুরো একটি জাতির জন্য ছিল গর্বের প্রতীক। এই স্মরণীয় জয়টি আজও ক্রীড়া প্রেমীদের মধ্যে আলোচনার শীর্ষে রয়েছে।

১৯৯৬ সালের শ্রীলঙ্কার সুপার স্টার্ট

১৯৯৬ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ছিল শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। যখন সারা বিশ্ব লক্ষ করছিল শ্রীলঙ্কা বিশ্বকাপের অন্য দলগুলোকে, তখন অপ্রত্যাশিতভাবে তারা দারুণ কিছু ম্যাচ জিতে নিয়ে সবকিছুর কেন্দ্রে চলে আসে।

শ্রীলঙ্কার দুর্দান্ত সূচনা, আর নির্ভীক খেলার মাধ্যমে বিশ্বকাপ জয়ের কাহিনী জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছায়। বহু দর্শক ভেবেছিল তারা অঘটনের বাইরে যাবে না, তবে তাদের অসাধারণ কঠোর পরিশ্রম ও দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রতিটি পর্যায়ে সাফল্য এনে দেয়।

আরও পড়ুনঃ  লিওনেল মেসি: ফুটবলের অনন্য কিংবদন্তি

এই অসাধারণ যাত্রার পিছনে ছিল আরাভিন্দ ডি সিলভা, সনত জয়সুরিয়া এবং মুত্তিয়া মুরালিধরনের মত ক্রিকেটারদের অবদানের কথা ভুলে যাওয়া যায় না। প্রথম থেকেই তারা দেখিয়ে দিয়েছিল যে তারা প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে প্রস্তুত।

আরো বিশেষ করে, তাদের খেলার স্টাইল এবং টিম কম্বিনেশন বিশ্বকাপের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হিসেবে চিহ্নিত হয়। শ্রীলঙ্কা বিশ্বকাপ জয়ের মাধ্যমে নিজেদের ইতিহাসে গভীর প্রভাববিস্তার করে গেছে, যা আজও সবসময় স্মরণীয়।

১৯৯৬ ক্রিকেট বিশ্বকাপ শুধুমাত্র শ্রীলঙ্কার জয়ে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ক্রিকেট বিশ্বে তাদের দাপুটে অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। তাদের জয় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করে, এবং ভবিষ্যতে অনেক দলকে নতুনভাবে আগ্রহী করে তোলে।

২০০৩ বিশ্বকাপে শচীনের সেঞ্চুরিয়ান ইনিংস

২০০৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপে শচীন তেন্ডুলকারের সেঞ্চুরিয়ান ইনিংস ছিল ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য একটি অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। তার সূক্ষ্ম ব্যাটিং ক্ষমতা এবং দৃঢ় মনোবল দিয়ে তিনি ভারতীয় দলের জন্য এক অনন্য উদাহরণ তৈরি করেন।

ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচ

ইন্ডিয়া পাকিস্তান ম্যাচ সবসময়ই ক্রিকেটের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচগুলোর একটি। ২০০৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপে, এই ম্যাচটি তেমনই একটি স্মরণীয় ঘটনার সাক্ষী হয়ে ওঠে। শচীনের অপরাজিত ৯৮ রানের বিস্ফোরক ইনিংস পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণকে শীতল করে দেয়। তার এই পারফরমেন্স ক্রিকেটপ্রেমীদের মন জয় করে নেয়।

ভারতীয় দলের রান তাড়া

পাকিস্তানের নির্ধারিত ২৭৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারতীয় দল শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে মাঠে নামে। শচীনের সেঞ্চুরির স্ট্রোক প্লে এবং দ্বিতীয় সেমিফাইনালে সাফল্যের কারণে দলটির মনোবল ছিল উচ্চ। দলের অন্যান্য ব্যাটসম্যানরাও দারুণভাবে শচীনের এই চেষ্টাকে পূর্ণতা প্রদান করে।

এই ইনিংস এবং ইন্ডিয়া-পাকিস্তান ম্যাচের মাধ্যমে ২০০৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় রচিত হয়। শচীনের সেঞ্চুরির মাধ্যমে দেখা যায়, কীভাবে একজন একক খেলোয়াড় পুরো ম্যাচের গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে। ভারতের রান তাড়া বিশ্বকাপের ইতিহাসে একটি বিশিষ্ট স্থান পেয়েছে।

২০০৭ বিশ্বকাপে যুবরাজের ছয় ছক্কা

২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে এক অসাধারণ মুহূর্ত হিসাবে বিবেচিত হয় যুবরাজ সিংয়ের ছয় ছক্কা মারার ঘটনা। ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে এই ইতিহাস গড়েন ভারতের বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান যুবরাজ সিং। ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ট ব্রডের একটি ওভারকে টার্গেট করে যুবরাজ ছয়টি ছক্কা মেরে এক ইনিংসে বিশ্বের নজর কাড়েন।

ফ্লিনটফের স্লেজিং

যুবরাজ ছয় ছক্কা ইনিংসের আগে ফ্লিনটফের স্লেজিং উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয়। ম্যাচের সময় অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের প্ররোচনামূলক কথোপকথন যুবরাজকে আরও আগ্রহী করে তোলে। এই স্লেজিংয়ের ফলে যুবরাজ নিজের সেরাটা বের করে নিয়ে আসেন এবং ব্যাট হাতে প্রতিশোধ নেন স্টূয়ার্ট ব্রডের ওভারে।

স্টুয়ার্ট ব্রডের এর বিরুদ্ধে তাণ্ডব

যুবরাজ ছয় ছক্কা মেরে স্টুয়ার্ট ব্রডের উপর এক তাণ্ডব সৃষ্টি করেন। এই ১৯তম ওভারটি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বাধিক স্মরণীয় জন্মস্থান পেয়ে যায়। যুবরাজের ১২ বলে ফিফটি হয়ে যায়, যা ছিল টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের দ্রুততম ফিফটি। এই অসাধারণ পারফরম্যান্স ভারতীয় দলের জন্য মাহত্বপূর্ণ প্রমাণিত হয় এবং ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের একটি কালজয়ী অধ্যায় হয়ে ওঠে।

২০১১ মুকুট পেলেন মহারাজ

২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালটি ছিল ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে এক অমর অধ্যায়। মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে, ভারত এই ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে পরাজিত করে নিজেদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছে।

আরও পড়ুনঃ  সাকিব আল হাসান: বাংলাদেশ ক্রিকেটের কিংবদন্তি

সরাসরি ফাইনালে, শ্রীলঙ্কা প্রথমে ব্যাট করে ২৭৪ রান সংগ্রহ করেছিল, যেখানে মাহেলা জয়াবর্ধনে ৮৪ বলে ৮৪ রান করেছিলেন। ভারতের জয়যাত্রা শুরু হয়েছিল উদ্বেগজনকভাবে; শচীন তেন্ডুলকর শুধুমাত্র ১৮ রান সংগ্রহ করেন কুমার সাঙ্গাক্কারার হাতে আউট হয়ে।

তারপরই গৌতম গম্ভীর অধিনায়ক হিসেবে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, ৯৭ রান সংগ্রহ করে ভারতের জয়ের ভিত মজবুত করেছিলেন।

শেষ পর্যন্ত, অধিনায়ক ধোনি অসাধারণ ব্যাটিং দক্ষতা প্রদর্শন করে দলকে জয়ের পথে নিয়ে আসেন। তার কালজয়ী ইনিংসটি ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম সেরা মুহূর্ত হয়ে থাকবে।

এই বিশ্বকাপ জয়ের মাধ্যমে শচীন তেন্ডুলকর দীর্ঘ ২১ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটে, যা তাঁর ক্যারিয়ারের অন্যতম স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে। ভারতের বিশ্বকাপ জয় শুধু একটি শিরোপা নয়, বরং ভারতীয় ক্রিকেটের গৌরবময় পুনঃঅর্জনের স্তুতি।

এই জয়ের মধ্যে দিয়ে ভারত প্রমাণ করেছিল যে, তাদের ক্রিকেটিয় শক্তি অবিস্মরণীয়। ২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ভারতের জয় একটি ঐতিহাসিক অধ্যায় সৃষ্টি করে, যা ক্রিকেট প্রেমীদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী থাকবে।

Cricket World Cup ২০১৫ সালের এলিয়টের অবিশ্বাস্য ইনিংস

২০১৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপের নকআউট রাউন্ডে, নিউজিল্যান্ডের সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে গ্রান্ট এলিয়টের ইনিংস ছিল অসাধারণ। সেই ম্যাচে এলিয়ট তাঁর ব্যাটিং দক্ষতা ও সাহসিকতার মাধ্যমে নিউজিল্যান্ডকে প্রথমবারের মতো ফাইনালে তুলেছিলেন।

নিউজিল্যান্ডের সেমিফাইনালের রোমাঞ্চ

এই ম্যাচটি ছিল একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত উত্তেজনায় পরিপূর্ণ। ২০১৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা ২৮১ রানের লক্ষ্য স্থাপন করেছিল। তবে এলিয়টের ৮৪ রানের অসাধারণ ইনিংস সেটিকে সম্ভবপর করে। ক্রিকটের ইতিহাসে এই ইনিংসটি অন্যতম অবিস্মরণীয় মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হয়।

দক্ষিণ আফ্রিকার পরাজয়

নিউজিল্যান্ড সেমিফাইনালের ম্যাচটি যেমন রোমাঞ্চকর ছিল, তেমনি দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য ছিল হতাশাজনক। শেষ ওভারে এলিয়ট ইনিংস দ্বারা নির্ধারিত হয় এই ম্যাচের ফলাফল, যেখানে তিনি স্টেইনের বলে একটি ছক্কা মেরে দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন। এটি ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য একটি কঠিন পরাজয়, কারণ তারা বিশ্বকাপ জয়ের জন্য আশাবাদী ছিল।

২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল

২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল নিঃসন্দেহে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর মুহুর্তগুলির মধ্যে একটি ছিল। খেলার শেষে যেসব নাটকীয় ঘটনা ঘটেছিল, তা ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে চিরকালীনভাবে গেঁথে রয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল একটি অসাধারণ জয় অর্জন করেছিল, যেটি কার্লোস ব্রাফেটের অনবদ্য ইনিংস দিয়ে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।

কার্লোস ব্রাফেটের নাম মনে রাখুন

ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই অলরাউন্ডার শেষ ওভারে ইংল্যান্ডের বোলার বেন স্টোকসের বিরুদ্ধে চারটি বিশাল ছক্কা মেরে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন পূরণ করেন। কার্লোস ব্রাফেটের এই দুঃসাহসিক পারফরম্যান্স টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হয়ে থাকবে। পাঁচ বল বাকি থাকতেই তার চমৎকার ইনিংস উইন্ডিজ দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়।

ইয়ান বিশপের অবিস্মরণীয় কমেন্ট্রি

কার্লোস ব্রাফেটের এই অতুলনীয় ইনিংসের সাথে সাথে ধারাভাষ্যকার ইয়ান বিশপের কন্ঠও স্মৃতি হিসেবে রয়ে যাবে। তার উচ্ছ্বাস – “কার্লোস ব্রাফেট, মনে রাখুন নামটা!” – ক্রিকেটপ্রেমীদের মন জয় করে নেয় এক লহমায়। এই কমেন্ট্রির কারণেই খেলাটি আরও স্মরণীয় রূপে পরিণত হয়েছিল। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল শুধুমাত্র একটি ম্যাচ নয়, এটি ইতিহাসের অংশ।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button