সর্দি থেকে মুক্তির উপায়

প্রতি বছর শীত ও বসন্তের মতো ঋতুগুলোতে সর্দির প্রকোপ বেড়ে যায়, যা অনেকসময় কমন কোল্ড বা ইনফ্লুয়েঞ্জা হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করে। তবে সর্দি মুক্তির জন্য এবং সর্দি প্রতিরোধে কিছু প্রাথমিক পদক্ষেপ আমাদের জীবনে অত্যন্ত জরুরি। উপযুক্ত পানি পান করা, প্রচুর বিশ্রাম নেওয়া এবং সঠিক সর্দি চিকিৎসা অনুসরণ করা এই সহজ উপায়গুলি হতে পারে আমাদের সহযাত্রী।

শিশুদের ক্ষেত্রে সর্দির লক্ষণ বেশ কয়েকদিন ধরে থাকতে পারে, এবং কমন কোল্ডের তুলনায় বমি এবং ডায়রিয়ার মতো প্রাদুর্ভাবও দেখা যেতে পারে। ফ্লুর কিছু লক্ষণ COVID-19 এর মতো হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রয়োজন মাফিক ঔষধি ব্যবহার এবং প্রতিরোধমূলক নিয়ম অনুসরণ করা দরকার। সর্দির জন্য কফ সিরাপ, অ্যান্টিহিস্টামাইন, বা নাক পরিষ্কার করার ড্রপ সাহায্যকারী হলেও, সর্দি মুক্তির জন্য তা নিয়মিত ব্যবহার না করাই উত্তম।

Contents show

সর্দির কারণসমূহ বোঝা

সর্দি একটি সাধারণ সমস্যা, যা বিভিন্ন কারণে ঘটতে পারে। বিশেষ করে, ঋতু পরিবর্তন এবং অ্যালার্জি এর প্রভাব অনেক সময়েই ঠান্ডা লাগার একটা প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই বিষয়ে বুঝতে গেলে আমাদের জানতে হবে যে কিভাবে বিভিন্ন বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ উপাদান সর্দির উৎপত্তি ঘটায়।

ভাইরাসের প্রভাব

সর্দির প্রধান কারণ হিসেবে ভাইরাস অন্যতম। রাইনোভাইরাস এবং করোনাভাইরাসের মতো ভাইরাসগুলি হল যেগুলি সাধারণত সর্দি সৃষ্টি করে থাকে। এগুলি বাতাসের মাধ্যমে তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ে এবং মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করে।

অ্যালার্জি ও বাতাসের পরিবর্তন

অ্যালার্জির প্রভাব ও বাতাসের পরিবর্তন অনেক সময় সর্দির কারণ হয়ে উঠে। ঋতু পরিবর্তনের সময় পরাগকণা, ধূলিকণা, বা অন্যান্য দূষক এজেন্টগুলি বাতাসে বৃদ্ধি পায়, যা অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং ধরনের ধরনের ঠান্ডা লাগা বা সর্দির উপসর্গ দেখা দেয়। এসব প্রতিক্রিয়া মোকাবিলা করতে শারীরিক অভ্যাস ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি।

প্রচুর পানি পান করা

সর্দি মোকাবেলায় পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শরীরের হাইড্রেশন বজায় রাখে যা ভাইরাল সংক্রমণের সময় আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় রাখতে সহায়তা করে।

শরীর হাইড্রেটেড রাখা

উচ্চ মাত্রায় হাইড্রেশন শরীর থেকে টক্সিন নিষ্কাশনে সহায়তা করে, যা ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অপরিহার্য। পর্যাপ্ত পানি পান করা শ্লেষ্মা স্তরকে পাতলা করে এবং নাক বন্ধ হওয়া প্রতিরোধ করে।

গরম পানির উপকারিতা

গরম পানি পান করার গরম পানির গুণ অসাধারণ। এটি নাসারন্ধ্র খুলে দেয় এবং গলা ব্যথা ও কফের উপশম ঘটায়। এক কাপ গরম পানিতে লেবুমধু মিশিয়ে পান করলে, এটি একটি ন্যাচারাল এন্টি-ভাইরাল পানীয় হয়ে ওঠে যা সর্দি প্রতিরোধ ও নিরাময়ে কার্যকরী।

বিশ্রাম ও ঘুমের গুরুত্ব

শীতকালে ঘুমের গুণমানের ওপর শীতের পরিবেশের প্রভাব অনস্বীকার্য। গবেষণা অনুসারে, অনেক মানুষ শীতে ঘুমাতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যায় পড়েন, যা শরীরের পুনরুদ্ধার ক্ষমতা হ্রাস করে এবং সার্বিক স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।

আরও পড়ুনঃ  মস্তিষ্কের ধোঁয়া দূর করার উপায়

পর্যাপ্ত বিশ্রামঘুম সর্দির প্রকোপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ। সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, শীতকালে মানুষ অন্যান্য ঋতুর তুলনায় গড়ে কম ঘুমান। তাই ঘুমের পূর্ব প্রস্তুতি ও পরিবেশ সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করাও একান্ত জরুরি।

শরীরের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া

ঘুম শরীরের বিভিন্ন ক্ষতি মেরামত ও কোষ পুনর্নির্মাণের একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। শরীরের পুনরুদ্ধার সর্বোত্তম সম্ভব করতে হলে, ঘুমের সময় ও মানের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ঘুম অপরিহার্য।

পর্যাপ্ত ঘুমের সুবিধা

  • ইমিউন সিস্টেমের উন্নতি: নিয়মিত ও পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় ও স্বাস্থ্যকর রাখে।
  • মানসিক স্বাস্থ্য: প্রচুর ঘুম মানসিক চাপ কমায় এবং মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।
  • শারীরিক স্বাস্থ্যের উন্নতি: ঘুম পেশী গঠন, হরমোন নিয়ন্ত্রণ এবং শারীরিক ক্ষতির পুনরুদ্ধারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অতএব, শীতকালে পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুম নিশ্চিত করার জন্য সঠিক পরিবেশ এবং জীবনধারা গ্রহণ করা অনিবার্য। ঘুমের মান ও স্বাস্থ্য উভয়ের উন্নতির জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নিন।

প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট খাবার

সর্দি থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে এবং সাধারণ ভাবে স্বাস্থ্য উন্নতির জন্য প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবারের গুরুত্ব অপরিসীম। এই ধরনের খাবারগুলি কেবল শরীরকে নানান রোগ থেকে রক্ষা করে না, বরং দৈহিক ও মানসিক সুস্থ্যতা বজায় রাখতেও সহায়তা করে।

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার

ভিটামিন সি একটি প্রধান অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে এবং ভাইরাসজনিত রোগ যেমন সর্দি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এমন কিছু খাবার যেমন কমলা, স্ট্রবেরি, কিউইফল এবং ব্রোকলি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবারের অন্যতম।

  • কমলা: প্রচুর ভিটামিন সি-যুক্ত, যা শরীরকে সর্দি থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে সাহায্য করে।
  • স্ট্রবেরি: অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণে ভরপুর, যা কোল্ড ও ফ্লু প্রতিরোধ করে।
  • কিউই: উচ্চ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা ইমিউন সিস্টেমকে বৃদ্ধি করে।
  • ব্রোকলি: একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা সাধারণ সর্দি ও ফ্লু-র সময় উপকারি।

রসুনের রোগ প্রতিরোধক গুণ

রসুন প্রাচীন কাল থেকেই একটি অবিস্মরণীয় রসুনের উপকারিতা হিসেবে পরিচিত। রসুনের অ্যালিসিন নামক উপাদানের অ্যান্টি-ইনফেক্টিভ প্রপার্টিগুলি কেবল সর্দি প্রতিরোধই করে না, বরং শরীরের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্ষমতাকেও বাড়ায়।

  • রসুন খাওয়া: প্রতিদিনের খাবারে কয়েক কোয়া রসুন যুক্ত করা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • রসুন প্রতিরক্ষা বাড়ায়: নিয়মিত রসুনের ব্যবহারে সর্দির সময়কাল কমে যায় এবং সর্দির প্রকোপ হ্রাস পায়।

সর্বোপরি, একটি সুস্থ ও সজীব জীবনযাত্রা এবং সর্দি মুক্ত অবস্থান ধরে রাখতে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি, এবং রসুনের উপকারিতা সমৃদ্ধ খাবারের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।

গরম পানির সোপান

গরম পানির সোপান শরীর ও মনের জন্য অনেক ধরনের উপকার নিয়ে আসে। সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি পাওয়ার সামগ্রিক প্রক্রিয়াতে এর গুরুত্ব অনস্বীকার্য। শীতকালীন মাসগুলিতে বা সর্দির সময়, গরম পানির ভাপ শ্বাস-প্রশ্বাসকে সহজ করতে ও গলা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এটি নাক ও গলা থেকে আরও কার্যকরীভাবে মিউকাস সরিয়ে দেয়।

গরম পানির সোপান প্রস্তুতি

গরম পানি প্রস্তুতির উপায় খুবই সাধারণ এবং কার্যকর। প্রথমে, পানি ফুটিয়ে নিন। এরপর এই গরম পানির সাথে কিছু ঔষধি উপাদান যেমন আদা, তুলসী পাতা বা লেবুর রস যোগ করুন। এটি নাক এবং গলা পরিষ্কার করতে ও শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। এই পদ্ধতিটি সর্দি প্রতিরোধ করার একটি প্রাকৃতিক উপায় হিসাবে কাজ করে।

গরম পানির ফায়দা

গরম পানি পান করার হাজার হাজার ফায়দা রয়েছে। এটি পাচনতন্ত্রকে উন্নত করে, শরীর থেকে টক্সিন মুছে ফেলে এবং অবসাদ কমায়। গরম পানি মেটাবলিজমকে বাড়িয়ে দেয় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। এছাড়াও, এটি ত্বককে সতেজ ও উজ্জ্বল করে তোলে, যা একটি সুস্থ দৈহিক চেহারার জন্য অপরিহার্য।

শ্বাসাঘাতের জন্য স্টিম থেরাপি

শ্বাসাঘাতে স্টিম থেরাপি এক অনন্য পদ্ধতি হিসেবে গণ্য হয় যা নাক পরিষ্কার করা এবং শ্বাসনালীর সংক্রমণ উপশম করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। গরম বাষ্প প্রয়োগের মাধ্যমে, এটি শ্বসন পথের মিউকাসকে আলগা করে এবং শ্বাসাঘাতে উল্লেখিত অস্বস্তি দূর করে।

আরও পড়ুনঃ  সংক্রামক রোগ কাকে বলে?

স্টিম থেরাপির সুবিধা

  • স্টিম থেরাপি শ্বাসপ্রশ্বাসের পথের শ্লেষ্মা অপসারণে অবদান রাখে
  • এটি নাক পরিষ্কার করা সহজ করে তোলে
  • হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের সময় শ্বাসাঘাত নিরাময়ে সাহায্য করে

কিভাবে স্টিম নেবেন

  1. সর্বপ্রথম একটি বড় পাত্রে গরম পানি তৈরি করুন এবং এর ওপর মাথা ঢেকে একটি তোয়ালে দিয়ে বাষ্প নেওয়া শুরু করুন।
  2. প্রতি সেশনে অন্তত ৫ থেকে ১০ মিনিট সময় নিন।
  3. স্টিম থেরাপির পরে গরম পানি এবং হালকা খাবারের সাথে নিজেকে হাইড্রেটেড রাখুন।

স্টিম থেরাপির মাধ্যমে নাক পরিষ্কার করার এবং শ্বাসাঘাতে উপশম প্রদানের এই পদ্ধতি আপনার দৈনিক জীবনের রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করা সহজ এবং উপকারী। এটি নিরাপদ এবং প্রাকৃতিক, যা কোন প্রকার রাসায়নিক বা ওষুধের প্রয়োজন না করে রোগীর মানসিক ও শারীরিক আরাম দেয়।

মধু ও লেবুর ব্যবহার

প্রাকৃতিক চিকিৎসা হিসাবে মধু ও লেবুর মিশ্রণ সর্দি উপশমে অত্যন্ত কার্যকর। এই প্রাকৃতিক উপাদানগুলি ব্যবহারের মাধ্যমে ছোট থেকে বড়, প্রত্যেকেই খুব সহজেই স্বাচ্ছন্দ্যে বাস করতে পারেন।

মধুর স্বাস্থ্যের উপকারিতা

  • মধু গলা ব্যথা ও কাশির জন্য একটি প্রাকৃতিক উপশমকারী হিসেবে কাজ করে।
  • এন্টিব্যাক্টেরিয়াল এবং এন্টিফাঙ্গাল গুণ থাকায়, মধু শরীরের প্রদাহ কমাতে সহায়ক।
  • শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, যা সর্দি মোকাবেলায় অপরিহার্য।

লেবুর প্রচুর উপকারিতা

  • লেবু ভিটামিন C এর একটি ধনী উৎস, যা ইমিউন সিস্টেমকে বৃদ্ধি করতে পারে।
  • প্রাকৃতিক ক্ষারীয় উপাদান হিসেবে, লেবু শরীরের pH ব্যালান্স বজায় রাখে।
  • লেবুর রস শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেওয়ার সাহায্য করে, যা কাশির তীব্রতা হ্রাস করে।

এভাবে, মধু ও লেবু কাশি ও সর্দির চিকিৎসার একটি সহজ ও প্রাকৃতিক সমাধান হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত এই দুই উপাদানের ব্যবহারে শীঘ্রই আপনি স্বস্তি অনুভব করতে পারেন।

ঔষধি পরামর্শ

সর্দি ও কাশির চিকিৎসায় প্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা হয়। আধুনিক বিজ্ঞান এসে আমাদের জন্য আরও উন্নত ও নিরাপদ সমাধান করে তুলেছে, যেগুলো প্রাকৃতিক উপাদান ও প্রাকৃতিক পদ্ধতির সাথে সমন্বয় করে পারফর্ম করে।

কফ সিরাপের বিভিন্ন প্রকার

বাজারে বিভিন্ন ধরণের কফ সিরাপ পাওয়া যায়, যেগুলো বিশেষ করে কাশি ও গলা ব্যথা নিরাময়ে কাজ করে। ভেষজ উপাদান যুক্ত কফ সিরাপ যেমন টিপারি, হলুদ, জিঞ্জিরা এবং মেন্টল সমৃদ্ধ সিরাপ শ্বাস প্রশ্বাসের পথ পরিষ্কার করে এবং আরাম প্রদান করে।

অলিভ অয়েল ও মেন্টল ব্যবহার

অলিভ অয়েল এবং মেন্টল শ্বাস প্রশ্বাসের পথ মুক্ত করার জন্য খুবই কার্যকর। অলিভ অয়েল এর মধ্যে থাকা ন্যাচারাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ গলা ও শ্বাসনালীতে অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে এবং মেন্টল কোল্ড সিম্পটম ভালো করার জন্য বিখ্যাত।

বাতাস পরিষ্কার রাখা

নিরাপদ ও সুস্থ পরিবেশ সুনিশ্চিত করতে ঘরের বাতাস পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরি। এই প্রক্রিয়ায় উন্নত বাতাসের মান বজায় রাখা এবং আরামদায়ক ঘর তৈরির জন্য এয়ার পিউরিফায়ার এবং নিয়মিত পরিষ্কারের গুরুত্ব অপরিসীম।

এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহৃত

আধুনিক এয়ার পিউরিফায়ারগুলি কেবল ঘরের বাতাস থেকে দূষণ পরিষ্কার করে না, তা শ্বাস প্রশ্বাসের পক্ষে উপকারী বাতাসের মান উন্নত করে। এই ডিভাইসগুলি জীবাণু, অ্যালারজেন, এবং ক্ষতিকারক কণাগুলি সরিয়ে ফেলে, যা বাতাসকে আরও শুদ্ধ করে তোলে।

ঘর পরিষ্কার রাখার টিপস

  • ঘর পরিষ্কার এবং ধূলামুক্ত রাখতে প্রতিদিন মেঝে, আসবাব, এবং ফ্ল্যাট পৃষ্ঠাগুলি পরিষ্কার করুন।
  • উচ্চ-ট্রাফিকের এলাকাগুলিতে বহুবার ঝাড়ু অথবা ভ্যাকুয়াম করা উচিত।
  • জানালাগুলি নিয়মিত খুলে দিয়ে ঘরে তাজা বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা করুন।
  • পর্দা এবং বিছানার চাদরগুলি নিয়মিত পরিষ্কার করা উচিত যাতে তারা ধুলো জমে প্রভাব না ফেলে।
আরও পড়ুনঃ  কি কি খাবারে ক্রিয়েটিনিন বাড়ে?

এই সহজ পদক্ষেপগুলি মেনে চললে, আপনার ঘরের বাতাসের মান ভালো থাকবে এবং ঘরটি পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যকর হয়ে উঠবে।

ঘরোয়া কনজেশন রিলিফ

ঠান্ডা লাগলে যত্ন নেওয়ার বহু উপায়ের মধ্যে, ঘরোয়া উপায়গুলো বিশেষ করে কনজেশন রিলিফ অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ। এই পদ্ধতিগুলি সহজেই ঘরে প্রয়োগ করা যায় এবং দ্রুত স্বস্তি প্রদান করে।

গরম কম্প্রেসের ব্যবহার

গরম কম্প্রেস মুখ, নাক, এবং গলার এলাকায় প্রয়োগ করে কনজেশন রিলিফ অর্জনে বিশেষ কার্যকরী। হালকা গরম তোয়ালে অথবা গরম পানির ব্যাগ ব্যবহার করে। এই পদ্ধতি রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে, এবং নাসারন্ধ্রের ব্লকেজ খুলে দেয়।

গরম ঝর্ণার স্বাস্থ্য উপকারিতা

  • গরম ঝর্ণায় নিয়মিত গোসল আপনার সর্দি লাগা শরীরকে কনজেশন রিলিফ দেয় এবং আরাম অনুভূতি প্রদান করে।
  • ঝর্ণার গরম বাষ্প শ্বাসপ্রশ্বাসের পথ পরিষ্কার করে এবং গরম কম্প্রেসের মতোই কাজ করে।

এমন উপকারিতা সর্দির চিকিৎসায় গরম ঝর্ণা এবং গরম কম্প্রেস দুটোকেই খুব একটা জনপ্রিয় করে তুলেছে। নিয়মিত এই পদ্ধতিগুলি প্রয়োগ করলে, কনজেশন সামলানো সহজ হয় এবং সর্দির উপসর্গ দ্রুত কমে আসে।

ঘরোয়া চিকিৎসা

ঘরোয়া চিকিৎসা ব্যবহার করা মানুষের জন্য সহজ ও কার্যকর উপায় রয়েছে, যা ছোটবেলা থেকেই চলে আসছে। সর্দি বা কাশির মতো সাধারণ আবহাওয়ার সমস্যাগুলির ক্ষেত্রে ঘরে বসেই কিছু সহজ সমাধান প্রস্তুত করা যায়। আদা চা এবং তুলসী পাতা এই প্রাকৃতিক উপাদানের দ্বারা প্রস্তুত ঘরোয়া চিকিৎসা আমাদের শ্বাসপ্রশ্বাস ও গলা পরিষ্কার রাখার প্রক্রিয়াতে সাহায্য করে।

আদা চায়ের পদ্ধতি

আদা চা তৈরির জন্য প্রথমে খোসা ছাড়ানো আদা পিসে নিন। একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে পিষ্ট আদা যোগ করুন। ৫ থেকে ৭ মিনিট ধরে সিদ্ধ করুন, এরপর সেই পানি ছেঁকে নিয়ে চুলায় থেকে নামিয়ে হালকা মিষ্টির সাথে খান। এই আদা চা শ্বাসকষ্ট এবং গলার ব্যথায় অত্যন্ত উপকারী।

তুলসী পাতার উপকারিতা

  • তুলসী পাতা অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল গুণাবলীর জন্য পরিচিত, যা সর্দি এবং কাশির লক্ষণ দূর করতে সাহায্য করে।
  • সর্দি প্রতিরোধের জন্য প্রতিদিন তুলসী পাতার রস খাওয়া উপকারী।
  • মুখে ঘা বা গলার ইনফেকশনের ক্ষেত্রে তুলসী পাতার রস একটি প্রাকৃতিক চিকিৎসা হিসেবে কাজ করে।

ঘরোয়া চিকিৎসা মাধ্যমে সহজেই বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব, এবং এর মধ্যে আদা চা এবং তুলসী পাতা ব্যবহার একটি দারুণ উপায় হতে পারে।

ডাক্তারি পরামর্শ নেওয়া

শীতের শুরুতে নানা ধরণের ভাইরাস সক্রিয় হয়ে উঠেছে, যার ফলে মানুষ বন্ধ নাকের সমস্যায় ভুগছেন। এই উপসর্গ লাঘবের জন্য অনেকেই ঘরোয়া নিরাময়ের দিকে ঝুঁকছেন এবং বাপীরির কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে প্রাকৃতিক উপাদান যেমন গরম কম্প্রেস, রসুন, মধু এবং আদা ব্যবহার করছেন।

কখন ডাক্তার দেখাতে হবে

যদি সর্দির গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয়, যেমন দীর্ঘস্থায়ী জ্বর, অবিরাম কাশি বা স্বাদ ও গন্ধ হারানো, তাহলে দ্বিধা না করে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ২০১৮ সালের এক গবেষণা অনুসারে, আদা, রসুন এবং লেবুর মতো ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার বা তাদের রস গ্রহণ করলে সর্দি ও কাশির উপসর্গ উপশম হয়।

চিকিৎসকদের সুপারিশসমূহ

অবশ্যই, সর্দি ও কাশির চিকিৎসায় আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা উষ্ণ পোশাক পরা এবং উষ্ণ পানীয় যেমন আদা চা, জুস বা সুপ পান করার পরামর্শ দেন যা শরীরকে উষ্ণ রাখে এবং সর্দি-কাশির উপসর্গগুলির মোকাবিলা করে। এর বাইরেও, যে কোনো ঘরোয়া প্রতিকারের আগে চিকিৎসক কখন যোগাযোগ করবেন এমন পরামর্শ নেওয়া উচিত। অনেক সময়, ইউক্যালিপ্টাস বা নীলগিরির তেল বা লবণ পানি দিয়ে গার্গলের মতো সহজ প্রতিকারগুলো থেকেও বেশ উপকার পাওয়া যায়।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button