কফের সাথে হালকা রক্ত আসার কারণ কি?
প্রায়শই আমাদের মধ্যে বিস্ময় জাগে যখন কফের সাথে রক্ত আসতে দেখি। এই ঘটনা যেমন চিন্তা জাগায়, তেমনি অনেক সময় ভিতরের গভীর কোনো শ্বাসপ্রশ্বাসের জটিলতার ইঙ্গিতও বহন করে। বাংলাদেশে যক্ষ্মা রোগের হ্রাস পাওয়া গেলেও, রোগটির সাথে সংযুক্ত উৎপন্ন রক্তকে অবহেলা করা উচিৎ নয়। বিশেষজ্ঞ ডা. মো. আব্দুল কাইয়ুম বলেন, চিকিৎসার হারের উন্নতি সত্ত্বেও, কাশি সমস্যার ক্ষেত্রে সজাগ দৃষ্টি বজায় রাখা জরুরি। ডিরেক্টলি অবজার্ভড ট্রিটমেন্ট শর্ট-কোর্স (DOTS) আকারে আসা চিকিৎসা পদ্ধতির ফলে রোগীরা তাদের ঔষধ প্রয়োগের প্রতি সচেতন হয়ে উঠেছেন।
মিডিয়া এবং NGO-এর সচেতনতা অভিযানের কারণেও টিইউবারকুলোসিসের প্রাদুর্ভাব কমতে দেখা গেছে। রোগীরা যখন স্বাস্থ্য সেবাকর্মীর তত্ত্বাবধানে তাদের চিকিৎসার পরিকল্পনা অনুসরণ করে, তখন তাদের সার্বিক পুনরুদ্ধারের হার অনেক বেশি হয়ে থাকে। এইসব উপাত্ত ও অভিজ্ঞতা বুঝিয়ে দেয় যে, কফের সাথে রক্ত আসা, যদিও উদ্বেগের বিষয়, তথাপি আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রে এটি চিকিৎসাযোগ্য এবং অনেক ক্ষেত্রে প্রতিরোধ্য একটি সমস্যা। এর জন্য অবশ্যই সময়োচিত চিকিৎসার দিকে নজর দেওয়া এবং সুস্থ জীবনযাপনের উপর জোর দেওয়া উচিৎ।
কফের সাথে হালকা রক্ত আসার একটি সাধারণ পরিচিতি
যখন কাশির সাথে হালকা রক্ত আসে, তখন এটি আমাদের সজাগ করে দেয় যে স্বাস্থ্যগত সমস্যা থাকতে পারে। এই লক্ষণটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে এবং প্রায়ই এটি চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং পরামর্শ প্রয়োজন হয়।
রক্তাক্ত কফ কি?
রক্তাক্ত কফ বা রক্ত মিশ্রিত কফ হল কাশি করার সময় কফের সাথে রক্তের উপস্থিতি। এটি মূলত হালকা থেকে মাঝারি মাত্রায় রক্তের অবস্থান দেখা দেয়, যা প্রাথমিকভাবে গুরুতর কিছু নয় কিন্তু আরও জটিল স্বাস্থ্যগত অবস্থার ইঙ্গিত দিতে পারে।
কফ ও রক্তের মধ্যে সম্পর্ক
কফের মধ্যে রক্তের উপস্থিতি বেশ কিছু কারণের দ্বারা হতে পারে, যেমন ফুসফুসের সংক্রমণ, ব্রংকাইটিস, বা শ্বাসকষ্ট সম্পর্কিত অবস্থান। এই রক্ত মিশ্রিত কফ হতে পারে ব্রংকাইটিস-এর ফলে, যা ফুসফুসের ক্ষুদ্র বায়ু নালীর সংক্রমণে হয়।
চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা
- শ্বাসকষ্ট: শ্বাস নেওয়ার সময় কষ্ট হলে দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন।
- রোগ নির্ণয়: কারণ এবং নির্ণয়ের জন্য শারীরিক পরীক্ষা ও নিয়মিত ডাক্তারি পরামর্শ অত্যন্ত জরুরি।
- নির্ধারিত চিকিৎসা: চিকিৎসার ধরণ নির্ভর করে রোগের মাত্রা ও ধরণের উপর, তাই নির্দিষ্ট চিকিৎসা পালন করা উচিত।
সামগ্রিকভাবে, যখন কফের সাথে রক্ত আসে, তখন এটি একটি গুরুতর লক্ষণ হতে পারে যা অবহেলা না করে যথাযথ চিকিৎসা এবং পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
রক্তাক্ত কফের বিভিন্ন কারণ
কফের সাথে রক্ত আসার প্রধান কারণগুলি অনেক সময়ে গভীর নৈরাজ্যকর এবং প্রায়শই বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হিসেবে প্রকাশ পায়৷
ফুসফুসের সংক্রমণ
ফুসফুসের সংক্রমণ যেমন নিউমোনিয়া বা যক্ষ্মা হল রক্তাক্ত কফের একটি প্রধান কারণ৷ যদি রোগীর দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের সংক্রমণ থাকে সেক্ষেত্রে এই লক্ষণটি প্রায়ই প্রকাশিত হতে থাকে৷ সময়মত চিকিৎসা এই ধরনের অবস্থা থেকে রোগীর রক্ষা করতে পারে৷
অ্যাজমা ও অ্যালার্জি
অ্যাজমা এবং অ্যালার্জি সমস্যাও কফের সাথে রক্ত আসার একটি প্রধান কারণ হতে পারে৷ অ্যালার্জির লক্ষণগুলি অনেক সময়ে শ্বাসনালীর প্রদাহ এবং তীব্র শ্বাসকষ্ট তৈরি করে, যার ফলে রক্তাক্ত কফ হতে পারে৷
মুখের বা গলায় সমস্যা
মুখ এবং গলার বিভিন্ন সমস্যা, যেমন গলার প্রদাহ, গলা ফাটা বা অন্যান্য ইনফেকশনে মুখ বা গলার রক্ষণাবেক্ষণে ব্যাঘাত ঘটতে পারে, যা রক্তাক্ত কফের কারণ হতে পারে৷ এই ধরনের অবস্থায় সাবধানতা এবং তত্পর চিকিৎসা একান্ত জরুরি।
রোগ চিহ্নিতকরণ ও পরীক্ষা
কফের সাথে রক্ত দেখা দিলে তা উপেক্ষা করা চলে না। এই লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে রোগ নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। এর মধ্যে বিভিন্ন মেডিকেল পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত থাকে, যা নির্দিষ্ট কারণ চিহ্নিত করতে সহায়তা করে।
ডাক্তারকে কখন দেখাতে হবে?
রক্তযুক্ত কফ দেখতে পেলে বা অন্য কোনো উপসর্গ যেমন জ্বর, শ্বাসকষ্ট হলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। সময়মতো স্বাস্থ্য পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
বিভিন্ন পরীক্ষা প্রক্রিয়া
- রক্তের পরীক্ষা: সংক্রমণের জন্য এবং অন্যান্য সম্ভাব্য স্বাস্থ্য সমস্যা চিহ্নিত করা।
- ফুসফুসের এক্স-রে: ফুসফুসের অবস্থান ও স্বাস্থ্যের সাধারণ অবলোকন।
- গলা ও শ্বাসনালীর এন্ডোস্কোপি: সরাসরি গলা ও শ্বাসনালীর ভেতরের অংশ পরীক্ষা।
রক্তের পরীক্ষা ও এক্স-রে
রক্তের পরীক্ষা ও এক্স-রে রোগ নির্ণয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এগুলি ডাক্তারকে রোগীর সমস্যার গভীরতা বুঝতে এবং উপযুক্ত চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করতে সাহায্য করে।
চিকিৎসার পদ্ধতি ও প্রতিকার
কোনো ব্যক্তি যখন কফের সাথে রক্ত বের হওয়ার সমস্যায় ভোগে, তখন তাকে নির্দিষ্ট চিকিৎসার পদ্ধতি মেনে চলতে হয়। এই চিকিৎসা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে যা নিয়ে আমরা নিচে আলোচনা করব।
গৃহস্থলি প্রতিকার
সামান্য রক্তকাশির ক্ষেত্রে, ঘরোয়া প্রতিকার খুব কার্যকরী হতে পারে। যেমন:
- পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা।
- বাষ্প নেওয়া যা শ্বাসনালীকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে।
- ধূমপান এড়ানো এবং ধুলাবালি থেকে দূরে থাকা।
ঔষধের প্রয়োজনীয়তা
আরও গুরুতর অবস্থার জন্য, মেডিকেশন প্রয়োজন হয়। চিকিৎসা পদ্ধতি অনুযায়ী:
- স্টেরয়েড ও অ্যান্টিবায়োটিক যা ব্যাক্টিরিয়া ও প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করে।
- ব্রঙ্কোস্কোপি, যা ফুসফুসের ভিতরের অবস্থা পরীক্ষা করে।
- রক্ত ক্ষরণ থামানোর জন্য এম্বোলাইজেশন পদ্ধতি।
শারীরিক চিকিৎসার গুরুত্ব
কখনো কখনো শারীরিক থেরাপিও প্রয়োজন হতে পারে যা শ্বাসকষ্ট ও কাশি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফিজিওথেরাপি মারাত্মক রোগতন্ত্রগুলিকে সচল রাখতে এবং সার্বিক সুস্থতা বজায় রাখতে আবশ্যক হতে পারে।
সব মিলে, চিকিৎসার পদ্ধতি ঠিক করতে গেলে উপসর্গগুলির গভীরতা, রোগের কারণ এবং রোগীর সাধারণ স্বাস্থ্য অবস্থা বিচার করা উচিত। চিকিৎসকের সাথে নিয়মিত পরামর্শ এবং নির্দেশ মেনে চলাই সবচেয়ে উত্তম।
প্রতিরোধের উপায়
রক্তশূন্যতার প্রকোপ এবং এর বিশ্বজুড়ে প্রভাব দেখে এটি স্পষ্ট যে এর প্রতিরোধ কেবল সম্পর্কিত ব্যক্তিগত উপায়ে সীমাবদ্ধ নয়, এটি একটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য অগ্রাধিকার। নিম্নলিখিত বিষয়াবলিগুলো অনুসরণ করে আমরা এসব সমস্যার প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারি:
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন
- পুষ্টিকর খাদ্য: লৌহ সমৃদ্ধ খাবার যেমন লাল মাংস, শাক-সবজি, এবং ফলমূল নিয়মিত গ্রহণ করা।
- হাইড্রেশন: পর্যাপ্ত পানি পান করা যা শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
- ব্যায়াম: নিয়মিত শারীরিক কসরত যা শ্বাস-প্রশ্বাসকে উন্নত করে এবং সার্বিক স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করে।
শ্বাসযন্ত্রের সুরক্ষা
- ধূমপান না করা এবং ধূমপানমুক্ত পরিবেশ অবলম্বন।
- এয়ার পলিউশন এড়ানো: পলিউশন যুক্ত এলাকা থেকে দূরে থাকা এবং এয়ার পিউরিফায়ারের ব্যবহার।
- শ্বাসযন্ত্র রোগীদের জন্য নিয়মিত চিকিৎসা অনুসরণ।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা
- বার্ষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা গ্রহণ যা সম্ভাব্য স্বাস্থ্যগত ইস্যুগুলি আগে ভাগে ধরতে পারে।
- শারীরিক পরীক্ষা, রক্ত পরীক্ষা, এবং অন্যান্য পরীক্ষা যা অবস্থার বোঝার জন্য প্রয়োজন।
এই প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপগুলি সম্পাদনের মাধ্যমে আমরা না কেবল নিজেদের জন্য বরং আমাদের সমাজের জন্য স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে পারি।
কফের সাথে রক্ত আসা, যাকে হেমপটিসিস বলা হয়, এটি একটি গুরুতর সমস্যা হতে পারে এবং এর নির্ণয় ও চিকিৎসা জরুরি। বিভিন্ন কারণে এই উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তবে, অনেক সময় এর পৃষ্ঠভূমি নিরীক্ষণ করা যায় না, যেখানে প্রায় ১৫ থেকে ২০% ক্ষেত্রে কোন স্পষ্ট কারণ চিহ্নিত করা যায় না।
অন্যান্য কমন কারণগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত:
- ব্রংকাইটিস
- নিউমোনিয়া
- টিউবারকুলোসিস
- লাং ক্যান্সার
- এন্টিকোগুল্যান্ট মেডিকেশনের প্রয়োগ
নির্ণয়ের জন্য সম্ভাব্য পরীক্ষাসমূহ:
- স্পুটাম পরীক্ষা
- রক্ত পরীক্ষা
- চেস্ট এক্স-রে
- ব্রঙ্কোস্কোপি
এই উপসর্গের পুনরাবৃত্তি হলে অথবা গুরুতর রক্তক্ষরণ ঘটলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রয়োজন। এরকম পরিস্থিতিতে, চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত। সঠিক চিকিৎসা প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হলে সঠিক নির্ণয় অপরিহার্য।
স্বাস্থ্য পেশাদারদের সাথে সম্মিলিতভাবে কাজ করে হেমপটিসিসের নির্ণয়ে এবং চিকিৎসা নির্ধারণে সহায়তা পাওয়া যায়। আগুনে সচেতনতা এবং নির্ধারিত চিকিৎসা অনুসরণ করার মাধ্যমেই সেরা সম্ভাব্য ফলাফল অর্জন করা সম্ভব।
কফের মাধ্যমে হালকা রক্ত আসার সমস্যা যখন ঘটে, তখন কিছু নির্দিষ্ট পরীক্ষা ও প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এর কারণ নির্ণয় করা সম্ভব। এই পরীক্ষাগুলির মাধ্যমে রোগীর সমস্যার মূল উৎস চিহ্নিত করা যায় এবং তার উপযুক্ত চিকিৎসা প্রদান করা যায়।
- ব্রোঞ্চোস্কোপি: এটি শ্বাসনালীর ভেতরের অবস্থা পরীক্ষা করার জন্য একটি তন্তুযান্ত্রিক ক্যামেরা ব্যবহার করে। এটি কফের মাধ্যমে রক্ত আসার সম্ভাব্য কারণ চিহ্নিত করতে সাহায্য করে।
- চেস্ট সিটি স্ক্যান: এটি ফুসফুস এবং অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের অঙ্গগুলির উচ্চ রেজোলিউশন ইমেজ প্রদান করে, যা রক্তপাতের কারণের সনাক্তকরণে সহায়ক।
- ফাইব্রোঅপটিক ল্যারিঙ্গোস্কোপি: এটি গলা এবং কণ্ঠনালীর অধ্যয়ন করে, যা রক্ত আসার উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে।
এই পরীক্ষাগুলি ছাড়াও, রক্তের পরীক্ষা এবং স্পিরোমেট্রি পরীক্ষা অন্যান্য সমস্যাগুলির সাথে হালকা রক্ত আসার সম্পর্ক নির্ধারণে সহায়ক হতে পারে। এগুলি সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি নির্বাচনে চিকিৎসকদের কাছে মূল্যবান তথ্য প্রদান করে।
যখন রোগী কফ করে বেশি মাত্রায় রক্ত ফেলে, তখন তা জরুরি চিকিৎসার আওতায় পড়ে। এই পর্যায়ে ব্রোঞ্চোস্কোপি, পালমোনারি আর্টেরিওগ্রাফি এবং ফুসফুসের বায়োপসি মতো পরীক্ষাগুলি জরুরি হয়ে পড়ে।
কফে রক্তের দেখা দেওয়াটি কখনও কখনও অল্প পরিমাণে হয় যা সাধারণত গুরুতর নয়, তবে কখনো কখনো এটি প্রচুর পরিমাণে হতে পারে যা জীবনের জন্য হুমকি সৃষ্টি করে।
হালকা হিমোপটিসিস ঘটে যখন কফে রক্তের সামান্য আভাস পাওয়া যায়, যা সাধারণত অগ্রহণযোগ্য নয় এবং প্রায় ৯০% ঘটনা চিকিৎসা ছাড়াই সমাধান হয়। অন্যদিকে, গুরুতর হিমোপটিসিস হল যখন ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১০০ থেকে ১০০০ মিলি রক্ত নির্গমন হয়, এবং এটি অবিলম্বে মেডিক্যাল হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
নিচের রোগগুলি থেকে রক্তাক্ত কফ উদ্ভূত হয়ঃ
- ফুসফুসের সংক্রমণ, যেমন ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়া।
- ক্রনিক ওবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (COPD) যা ফুসফুসের বাতাসের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে।
- ফুসফুস ক্যান্সার, যা সাধারণত ধূমপানকারীদের মধ্যে বেশি হয়।
- টিউবারকুলোসিস (TB), যা এক ধরণের ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ।
গুরুতর ক্ষেত্রে অক্সিজেন সাপ্লিমেন্ট এবং ইন্টিউবেশনের মাধ্যমে শ্বাসকষ্ট নিরাময় করা হয়। যদি রক্তপাত অব্যাহত থাকে তাহলে তা হতে পারে মারাত্মক অবস্থা যা ফুসফুস ক্যান্সারের মতো গুরুতর রোগের লক্ষণ হতে পারে এবং অবিলম্বে চিকিৎসা প্রয়োজন।
অবশ্যই, যে কোনো রক্তাক্ত কফের ঘটনা যখন দেখা দেয়, তখন তা অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অকারণে উপেক্ষা করলে অপরিচিত জটিলতায় পড়া সম্ভব।
যখন কফের সাথে রক্তের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়, তখন অবশ্যই এর গুরুত্ব ও কারণ নির্ধারণে মনোযোগী হতে হবে। মৃদু হেমপটিসিস, যেখানে কফে হালকা রক্ত দেখা যায়, সাধারণত গুরুতর নয়, কিন্তু বিপুল পরিমাণে রক্তপাত হতে পারে জীবনহানিকর।
চিকিৎসার পদ্ধতি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যা রোগীর অবস্থা এবং রক্তাক্ত কফের প্রকৃতি অনুযায়ী নির্ভর করে। অনেক সময়, অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসা, স্টেরয়েড বা প্রদাহজনক অবস্থার চিকিৎসা প্রয়োজন হয়।
- ব্রংকোস্কোপি এবং সিটি স্ক্যান: এগুলি অন্তর্নিহিত কারণ নির্ণয় করতে সাহায্য করে।
- জীবন-রক্ষাকারী চিকিৎসা: যেমন ব্রঙ্কিয়াল ব্লকেড বা ইনটুবেশন।
- ঔষধ: ভাসোকন্সট্রিক্টর্স, রক্ত পণ্য ট্রান্সফিউশন এবং অন্যান্য।
রক্তাক্ত কফ যখন অত্যধিক ও জীবন-হানিকর মনে হয়, তখন সাথে সাথে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করা উচিত। প্রাথমিক পরীক্ষার পর উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়, যা রোগীর পুনরুদ্ধারে অপরিহার্য।
সাধারণত এই ধরনের চিকিৎসা আইসিইউ অবস্থায় সঞ্চালিত হয়, যেখানে অক্সিজেন সাপ্লিমেন্টেশন, রক্তপাত নির্ণয় এর ব্যবস্থা রয়েছে।
রক্তাক্ত কফ মানেই শুধু কিছু গুরুতর অসুখের লক্ষণ নয়, এটি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা জানান দিতে পারে। প্রায় ৬০-৭৫% গর্ভবতী মহিলা হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে জিঞ্জিভাইটিসের শিকার হয়ে থাকেন, যা মুখে রক্তের স্বাদ নিয়ে আসতে পারে।
রক্তাক্ত কফের সাধারণ কারণসমূহ
বিভিন্ন সাধারণ কারণের মধ্যে প্রবল কাশি, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, বুকে ইনফেকশন যেমন ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া, টিউবারকুলোসিস, এবং পালমোনারি এম্বোলিজম অন্যতম। গুরুতর অবস্থার মধ্যে থাকতে পারে ফুসফুসের ক্যান্সার, গলার ক্যান্সার এবং সিস্টিক ফাইব্রোসিস।
রক্তাক্ত কফের পরীক্ষা ও চিকিৎসা
রক্তাক্ত কফের ডায়াগনস্টিক পদ্ধতি হিসেবে চেস্ট এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, ব্রঙ্কোস্কপি, রক্তের পরীক্ষা, এবং বায়োপসি অন্যতম। চিকিৎসায় মূলত উপসর্গের কারণ নির্ধারণ করে তার প্রতিকার করা হয়, যেমন ইনফেকশনের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক, ভাইরাল ইনফেকশনের জন্য অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ, এবং টিউমার বা রক্তের জমাট বাঁধার জন্য সার্জারি।
- রক্তাক্ত কফের প্রধান চিকিৎসা হলো তার মূল কারণ চিহ্নিত করা এবং তা নিরসন করা।
- ধূমপান বর্জন, পর্যাপ্ত পানি পান করা, পরিষ্কার পরিবেশ রক্ষা করা, এবং সাথে সাথে শ্বাসকষ্টের চিকিৎসায় মনোযোগ দেওয়া থেকে রক্তাক্ত কফ প্রতিরোধের সহায়ক হতে পারে।
সম্মুখীন হওয়া বিভিন্ন লক্ষণ ও কারণ বিশ্লেষণের পর, কফের মধ্যে রক্ত আসার বিষয়টি মারাত্মক অবহিতকরণ বহন করে। ফুসফুস জনিত বিস্তারিত শর্তসমূহ যেমন ব্রঙ্কাইটিস, পালমোনারি এম্বলিজম, ব্রঙ্কিএক্টাসিস, টিউবারকুলোসিস, লাং ক্যান্সার, গ্রানুলোমাটোসিস উইথ পলিঅ্যাঙ্জাইটিস এবং মাইট্রাল ভাল্ভ স্টেনোসিস এ ধরনের কফে রক্তের প্রাদুর্ভাবের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
একজন ব্যক্তি যদি হঠাৎ করে বেশী পরিমাণে উজ্জ্বল লাল বা মরিচা বর্ণের কফ বের করে এবং তার মধ্যে রক্তের অংশ থাকে, তবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা অবস্থা বটে। এক্ষেত্রে, শীঘ্রই চিকিৎসার সন্ধান করা উচিত। রোগীদের উচিত, তারা যখন এবং কতক্ষণ কফসহ রক্ত ত্যাগ করছেন এবং তারা ঠিক কী ধরনের শ্লেষ্মা বের করছেন তা লক্ষ্য করা।
রোগীদের নিয়মিত তরল গ্রহণ করা উচিত যাতে শ্লেষ্মা সর্বদা তরল থাকে এবং কফের মাধ্যমে তা বের করা সহজ হয়। প্রস্কৃত এন্টিবায়োটিকগুলির পূর্ণ কোর্স সম্পন্ন করা উচিত, কারণ এটি কার্যকর চিকিৎসা নিশ্চিত করে এবং জটিলতা এড়ানোর সুযোগ দেয়। এরূপ স্বাস্থ্যগত জটিলতায় ধূমপান বা তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার এড়িয়ে চলা এবং ধূলিসাৎ করা বা অন্যান্য দূষণযুক্ত পদার্থের সংস্পর্শ থেকে বিরত থাকা, শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্যকর রক্ষার জন্য এবং কফের উপসর্গ আরও খারাপ হওয়া থেকে বিরত রাখা। রোগীর অ্যালার্জি বা অন্যান্য ওষুধের সাথে হস্তক্ষেপের ভয় থাকলে ডাক্তারের নির্দেশ ছাড়া কফের ওষুধ গ্রহণ না করাই ভালো।