বাচ্চাদের রক্তে ইনফেকশন কেন হয়?
পৃথিবীব্যাপী সেপসিস অধিক মৃত্যুর কারণ, হৃদ্রোগ এবং স্ট্রোকের চেয়েও বেশি। তবে, জনসাধারণের মাঝে এর সচেতনতা এখনও তুলনামূলকভাবে কম। বাচ্চাদের রক্তে ইনফেকশন হল সংক্রমিত আক্রমণ যেখানে জীবাণু এবং বিষাণু শিশুদের রক্ত প্রবাহে ছড়িয়ে পড়ে। বাচ্চাদের রক্তে এমন সংক্রমণের ফলে শিশুদের সেপসিস ঘটতে পারে, যা অতি জরুরি চিকিৎসা ছাড়া জীবনহানীর ঘটনা ঘটাতে পারে। প্রথম লক্ষণ হিসেবে দেখা যায় মানসিক দিগ্বিজয়, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, কম বা জ্বরের তাপমাত্রা, কম প্রস্রাব প্রতিপাদন, এবং হঠাৎ পেশী ব্যথা ও বমি হয়ে থাকে।
শিশুদের রক্ত সংক্রমণ প্রতিরোধ জরুরি কারণ, বাচ্চাদের চিকিৎসা অধিক জটিল ও নাজুক হতে পারে। সেপসিস ডায়াগনোসিস কনফারেন্স ২০০১-এ ইনটেনসিভ কেয়ার কন্টেক্সটে সেপসিস ম্যানেজমেন্ট এবং ডেফিনিশনের ওপর জোর দেয়া হয়েছিল। অন্যদিকে, ভারতের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে সেপসিসে আক্রান্ত ৩৪% রোগীর মৃত্যু হয়। তাই, শিশুদের জন্য সচেতন ও প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান সহায়ক হিসেবে কাজ করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে সাম্প্রতিক গবেষণা এবং নির্দেশাবলী অনুযায়ী চিকিৎসার পদ্ধতি স্থাপন জরুরি বলে মনে করা হয়।
বাচ্চাদের রক্তে ইনফেকশনের প্রাথমিক কারণসমূহ
বাচ্চাদের রক্তে ইনফেকশন ঘটার পিছনে মূলত তিনটি প্রধান কারণ রয়েছে: ভাইরাল, ব্যাকটেরিয়াল এবং ফাঙ্গাল ইনফেকশন। প্রতিটি কারণের বিবরণ নিম্নে উল্লেখ করা হল।
ভাইরাল ইনফেকশন
ভাইরাল ইনফেকশন সাধারণত বাচ্চাদের রক্তে ভাইরাস এর মাধ্যমে হয়ে থাকে। এই ধরনের ইনফেকশন বাচ্চাদের দেহের কোষগুলিকে আক্রমণ করে, যেখানে ভাইরাসগুলি কোষের অভ্যন্তরে বৃদ্ধি পেয়ে রোগ সংক্রান্ত প্রতিক্রিয়া জাগায়। এই প্রক্রিয়াটি ভাইরাস জনিত ইনফেকশনের অন্যতম উদাহরণ।
ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন
বাচ্চাদের রক্তে প্রায়শই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে যা সেপসিসের মতো গুরুতর অবস্থার সৃষ্টি করে। এর ফলে রক্তে বিষাক্ত উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে বাচ্চাদের শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ দিকে যেতে পারে। ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবের এই ধরণ সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থান এবং বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ফাঙ্গাল ইনফেকশন
ফাঙ্গাল ইনফেকশন বিশেষ করে রক্তে ছত্রাকের মাধ্যমে হয়, যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়ে শিশুদের রক্তে ছড়িয়ে পড়ে। এটি উচ্চারিত জ্বর, অতিরিক্ত ক্লান্তি বা অন্যান্য গুরুতর লক্ষণগুলির মাধ্যমে প্রকাশ পেয়ে থাকে যা শীঘ্রই চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। ফাঙ্গাল ইনফেকশনগুলি প্রায়শই পরিবেশগত কারণের ফলে হতে পারে এবং এই আক্রান্তি দীর্ঘকালীন হতে পারে।
বাচ্চাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ইনফেকশন
শিশু স্বাস্থ্য এবং তাদের ইমিউনিটি বিকাশের বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। বাচ্চাদের শারীরিক প্রতিরোধ ক্ষমতা বিশেষ করে তারা যখন খুব ছোট, তখন প্রায়শই দুর্বল থাকে। এই দুর্বলতা তাদেরকে নানারকম ইনফেকশনের প্রতি সহজেই আক্রান্ত করতে পারে।
ছোট বয়সে দুর্বল প্রতিরোধ ক্ষমতা
আমাদের শিশুদের প্রতিরোধ ক্ষমতার বিকাশ পুরোপুরি ঘটে না যদি না তারা কিছু বছর বেড়ে উঠে। এই সময়ে তারা দুর্বলতা ও ইনফেকশন এর জন্য বেশি ঝুঁকিতে থাকে। নিয়মিত হাত ধোয়া এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রাখার মতো সাধারণ প্রতিরোধ ব্যবস্থাগুলো এই ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
দুর্বলতার কারণে ইনফেকশন
বাচ্চাদের মধ্যে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তাদের বয়স ও পুষ্টির উপর নির্ভর করে। খাদ্য ও পুষ্টির অভাব, টিকা না নেওয়া, অনুপযুক্ত আবাসিক পরিবেশ এসব কারণে তাদের মধ্যে শিশুদের ইমিউনিটি দুর্বল হয়ে পড়ে, যা সহজেই ইনফেকশনের দ্বার খুলে দেয়। এই দুর্বলতা থেকে উঠে আসার জন্য যথাযথ খাদ্য এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ অপরিহার্য।
সামগ্রিকভাবে, বাচ্চাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় যখন তাদের জীবনযাত্রায় পরিপূরক পুষ্টি এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো সমন্বিত হয়। অতএব, শিশুরা যেন নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে, সেদিকে নজর দেওয়া আমাদের সকলের দায়িত্ব।
পরোক্ষ কারণে ইনফেকশন বৃদ্ধি
শিশুদের ব্যাপক সুস্থতা ও স্বাস্থ্য রক্ষার্থে পরিবেশগত এবং পুষ্টিগত উপাদানগুলির এক অনন্য গুরুত্ব রয়েছে। এসব উপাদানের অভাব শিশুদের মধ্যে ইনফেকশন ঝুঁকি ফ্যাক্টর উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে।
অপুষ্টি ও স্বাস্থ্যের অভাব
শিশু অপুষ্টি এবং স্বাস্থ্যে অভাব রয়েছে ইনফেকশনের বৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসাবে। পুষ্টির ঘাটতি শিশুদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিয়ে তাদের বিভিন্ন রোগজীবাণুর প্রতি অধিক সংবেদনশীল করে তোলে। পুষ্টিসম্ভারের অভাবে শিশুরা ইনফেকশনের সম্ভাবনায় বেশি পরিমাণে আক্রান্ত হতে পারে, যা তাদের সমগ্র বৃদ্ধি ও উন্নয়নে বাধা দেয়।
পরিবেশগত কারণ
দূষিত পরিবেশ এবং নোংরা জীবনযাত্রা একটি পরিবেশগত প্রভাব হিসেবে চিহ্নিত যা শিশুদের ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। অনিরাপদ পানি, ক্ষয়প্রাপ্ত বিরোধী এলাকা, অপরিচ্ছন্ন বায়ু এবং বিক্ষিপ্ত আবর্জনা ব্যাক্টেরিয়া ও ভাইরাসের বেঁচে থাকা ও বিস্তারে সহায়ক হয়ে উঠে, যা উল্লেখযোগ্যভাবে ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়ায়।
- দূষিত পানি ও বাতাসের কারণে শিশুরা অস্থায়ী শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যায় ভুগতে পারে।
- অনিরাপদ খাদ্যাভ্যাস ও খাদ্য সংরক্ষণহীনতাও পুষ্টির অভাবজনিত জটিলতা সৃষ্টি করে।
এই প্রবণতাগুলো নিরসন করা গেলে শিশু অপুষ্টি ও ইনফেকশনের ঝুঁকি সমূহ কমে যেতে পারে। এই উপায়ে, আমাদের সমাজ ও শিশুদের কল্যাণের জন্য একটা সুস্থ উপনিত হতে পারে।
ইনফেকশন শনাক্তকরণ পদ্ধতি
ইনফেকশন নির্ণয় ও শনাক্তকরণ স্বাস্থ্যসেবায় একটি অপরিহার্য কম্পোনেন্ট। শারীরিক পরীক্ষা থেকে শুরু করে ব্যাপকভাবে ক্লিনিকাল পরীক্ষা এবং রক্ত পরীক্ষা পর্যন্ত বিভিন্ন মাধ্যমে চিকিৎসকরা ইনফেকশন শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকেন।
ক্লিনিকাল পরীক্ষার ভূমিকা
ক্লিনিকাল পরীক্ষা ইনফেকশনের ধরণ অনুধাবন করা সহ অনেক ক্ষেত্রেই প্রাথমিক পরিচালনা এবং নির্ণয়ের জন্য অপরিহার্য। উদাহরণস্বরূপ, ত্বকের পরীক্ষা, শ্রবণ এবং দৃষ্টিগত যাচাই, এবং তাপমাত্রা এবং রক্তচাপের পরিমাপ ক্লিনিকাল পরীক্ষার অংশ। এটি সম্ভাব্য ইনফেকশনকে আরও নির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করার ভিত্তি স্থাপন করে।
রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা
রক্ত পরীক্ষা একটি অত্যন্ত নির্ণায়ক টেস্ট, যা শনাক্তকরণে অত্যন্ত কার্যকর। সাধারণত, একটি বিস্তারিত রক্তের পরীক্ষা যেমন কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (CBC) সহ বিভিন্ন প্রকারের রক্ত পরীক্ষা সাদা রক্ত কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং রক্তে ইনফেকশনের অন্যান্য মার্কারগুলো চিহ্নিত করে, যা ইনফেকশনের ধরণ এবং তীব্রতা নির্ণয় করার ক্ষেত্রে অন্যতম।
সঠিক ইনফেকশন নির্ণয় ও শনাক্তকরণ পদ্ধতি নির্বাচন করা মানবজীবনের মান রক্ষার্থে অপরিহার্য।
রক্তে ইনফেকশনের উপসর্গ
রক্তে ইনফেকশনের উপসর্গ সাধারণত ভিন্ন ভিন্ন পর্যায়ে দেখা দেয়, যা ইনফেকশন লক্ষণসমূহ ও সেপসিস সিম্পটমস অনুযায়ী চিহ্নিত করা হয়। প্রাথমিক লক্ষণসমূহ হিসাবে জ্বর, ক্লান্তি এবং ব্যথা প্রধান হয়ে থাকে, যা অতি দ্রুত গুরুতর উপসর্গে পরিণত হতে পারে।
সাধারণ লক্ষণসমূহ
- জ্বর অথবা অস্বাভাবিক তাপমাত্রা
- রক্তে চাপ বৃদ্ধি বা হ্রাস
- শ্বাসকষ্ট ও হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি
- ক্লান্তি এবং দুর্বলতা
গুরুতর লক্ষণসমূহ
- মানসিক অবস্থার হ্রাস এবং সচেতনতা কমে যাও৯া
- তীব্র মাথাব্যাথা ও চক্ষুদৃষ্টির সমস্যা
- হাত ও পায়ের রঙের পরিবর্তন বা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া
- সেপটিক শক, যার ফলে ক্ষতিকর জৈবিক অঙ্গদানটি বিঘ্নিত হতে পারে
যেকোনো রকম ইনফেকশন সতর্কতা যখন লক্ষ্য করা যায়, তখন অবিলম্বে চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত অপরিহার্য। গুরুতর উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই বিশেষ নজর দিয়ে চিকিৎসার প্রতি মনোযোগী হওয়া দরকার।
বাচ্চাদের জন্য সঠিক চিকিৎসা
বাংলাদেশে সম্পন্ন হয়েছিল, সেখানে প্রতি হাজারে আট থেকে নয়জন বাচ্চা হৃদ্রোগের বিভিন্ন ত্রুটি নিয়ে জন্ম নেয়। হৃদ্রোগের আকার এবং অবস্থান অনুযায়ী চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারিত হয়, যা বাচ্চার পূর্ণ পুনরুদ্ধারের জন্য অত্যাবশ্যক।
অ্যান্টিবায়োটিক
বাচ্চাদের মধ্যে এট্রিয়াল সেপ্টাল ত্রুটি (ASD) বা ভেন্ট্রিকিউলার সেপ্টাল ত্রুটি (VSD) থাকলে এই ত্রুটির ফলে হৃদপিন্ড এবং ফুসফুসে অনিয়মিত রক্ত সঞ্চালন ঘটতে পারে। হৃদ্রোগের চিকিৎসায় চেস্ট এক্স-রে, ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাম (EKG), ইকোকার্ডিওগ্রাম এবং কার্ডিয়াক ক্যাথেটারাইজেশন প্রণালী জরুরি। শিশুদের অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসা এবং অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপি হৃদপিন্ডের ছোট ত্রুটির অবর্তমানে স্বেচ্ছায় বন্ধ হয়ে যেতে পারে, কিন্তু বড় ত্রুটিগুলি প্রাথমিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।
অটিজম আক্রান্ত শিশুদের বিষয়ে গবেষণা ধারাবাহিকভাবে দেখায় যে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিভাজনের ভিত্তিতে অটিজমের প্রবণতা নগরায়নে গ্রামীণ এলাকাঅপেক্ষা অধিক। ঢাকা শহরে শিশুদের অটিজমের অনুপাত যেখানে ১০০:৩, সেখানে গ্রামীণ এলাকায় এটি ৭০০:১। অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসা এবং সঠিক থেরাপি মাধ্যমে অটিজমের লক্ষণ হ্রাস পেতে পারে, যা বিশেষ বিষয়ে অগ্রগতি এবং আচরণে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।