ঢোক গিলতে গলা ব্যথা কেন হয়?

গলা ব্যথা হল একটি সাধারণ উপসর্গ যা বিভিন্ন ধরনের গলা জ্বালাপোড়া এবং ঢোক গিলতে সমস্যা থেকে হতে পারে। শিশু থেকে বড়, সব বয়সী মানুষের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দেয়, কিন্তু বিশেষ করে ৩-১৫ বছর বয়সি শিশুরা স্ট্রেপ্টোকক্কাস প্যোজেনিসের জন্য ব্যাকটেরিয়াজনিত গলা ব্যথার ঝুঁকিতে থাকে। আমাদের রুটিন পরিবেশ যেমন অফিস, স্কুল, বিমানবন্দরের মতো জায়গায় গলা ব্যথার কারণ হিসেবে ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস ঝুঁকি অনেক বেশি।

ভাইরাসজনিত গলা ব্যথা প্রায়ই ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে উন্নতি পায়। গলা ব্যথার কারণ, যেমন নির্দিষ্ট খাবারের বিপাকীয় প্রতিক্রিয়া, ধূমপান বা অ্যালার্জির ফলে হয়ে থাকে, তা দ্রুত শনাক্ত করার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। এছাড়া গলা ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হলে বা ১০ দিনের বেশি স্থায়ী হলে, জটিল সংক্রমণের ইঙ্গিত হতে পারে। সুতরাং, গলা ব্যথার প্রথম সপ্তাহের পর পরিস্থিতি খারাপ হলে অবিলম্বে মেডিকেল পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

Contents show

গলা ব্যথার সাধারণ কারণসমূহ

গলা ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা যা নানাবিধ কারণে হতে পারে। এই ব্যথা প্রায়শই ফ্যারিঞ্জাইটিস হিসাবে পরিচিত, যা গলার ফ্যারিন্সের প্রদাহজনিত স্থিতি। গলা ব্যথার মূল তিনটি কারণ হল: ভাইরাল সংক্রমণ, ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ এবং অ্যালার্জি বা লরমাস।

ভাইরাসজনিত সংক্রমণ

ভাইরাসজনিত সংক্রমণ গলা ব্যথার প্রধান কারণগুলির একটি। সাধারণ ঠান্ডা বা ফ্লু এর মতো ভাইরাল অবস্থাগুলি প্রায়ই ভাইরাল সংক্রমণ সৃষ্টি করে যা গলা ব্যথা ডেকে আনে। এই ধরণের সংক্রমণের বৈশিষ্ট্য হল যে এটি সাধারণত অন্যান্য লক্ষণগুলি যেমন কাশি, নাক বন্ধ হওয়া এবং জ্বর দ্বারা সহযুক্ত হতে পারে। ভাইরাল সংক্রমণ সাধারণত নিজে নিজেই সেরে যায়, যদিও উপসর্গ দূ�

গলা ব্যথার লক্ষণগুলি কেমন?

গলা ব্যথা হল এমন এক সাধারণ উপসর্গ, যা বিভিন্ন অসুখের পূর্বলক্ষণ হিসেবে ধরা হয়। গলার লক্ষণ বিভিন্ন রকমের হতে পারে, যা সাধারণত আপনার স্বাস্থ্যের আরো গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলির ইঙ্গিত দেয়।

গলা জ্বালা

যখন গলা জ্বালাপোড়া সমস্যা হয়ে থাকে, তখন এটি প্রথমে মনে হয় যেন গলায় কিছু আটকে আছে বা গলা খুসখুস করছে। এই ধরণের গলা জ্বালাপোড়া অনেক সময় অন্যান্য ভাইরাসজনিত উপসর্গের সাথে হয়ে থাকে।

আরও পড়ুনঃ  কি কি খাবারে ক্রিয়েটিনিন বাড়ে?

গিলতে কষ্ট হওয়া

খাবার বা তরল গ্রহণে কষ্ট হওয়া একটি প্রধান গলার যন্ত্রণা, যা জ্বালাপোড়া এবং বিস্তর ব্যথার সাথে আসতে পারে। এটি প্রায়শই ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশান বা ভাইরাল ইনফেকশানের ফলাফল হিসেবে দেখা যায়।

শুকনো গলা

শুকনো গলা হল এমন একটি সমস্যা যেখানে সাধারণ আর্দ্রতা গলার ভিতরে থাকে না, ফলে ব্যথা এবং অসুবিধা বৃদ্ধি পায়। তীব্র শুষ্কতা এবং বাতাসের প্রকৃতি বা
AC-র বাড়াবাড়ি ব্যবহারের কারণে এই গলার যন্ত্রণা প্রকোপ বাড়তে পারে।

এসব লক্ষণগুলির সম্যক পরিচর্যা ও সমীক্ষাণ জরুরি। একবার লক্ষণগুলি চিহ্নিত হলে, নির্দিষ্ট চিকিৎসা ও প্রতিকারের মাধ্যমে গলা ব্যথা হ্রাস পাওয়া সম্ভব।

গলা ব্যথা কি ধরনের সমস্যা নির্দেশ করে?

সাধারণত, গলা ব্যথা বিভিন্ন ধরনের সাধারণ অসুখের লক্ষণ হিসেবে পরিচিত। যেমন- ভাইরাল অথবা ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ। তবে, এই লক্ষণটি আরও কিছু গভীর এবং জটিল সমস্যার ইঙ্গিতও দিতে পারে।

সোজা অসুখের চিহ্ন

অ্যালার্জি, ফ্লু, বা ঠান্ডা লাগলে গলা ব্যথা সাধারণ হয়। এগুলি অত্যন্ত সাধারণ সমস্যা এবং সাধারণত কিছু দিনের মধ্যেই আপনা-আপনি সেরে যায়।

জটিল অসুখের সংকেত

দীর্ঘস্থায়ী গলা ব্যথা যদি নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া অব্যাহত থাকে, তাহলে এটি ক্যানসারের ইঙ্গিত হতে পারে। বিশেষ করে গলার টিউমার বা অন্যান্য টিউমার লক্ষণ সনাক্ত করার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

  • সঠিক নির্ণয়ের জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন
  • দীর্ঘমেয়াদী গলা ব্যথা অবহেলা না করা

গলা ব্যথা অনেক সময় হালকা এবং অস্থায়ী হতে পারে, কিন্তু যদি এটি দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং অন্যান্য উপসর্গের সঙ্গে আসে, তাহলে এটি আরও গভীর স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।

গলা ব্যথার জন্য সাধারণ চিকিৎসা পদ্ধতি

গলা ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা যা অনেক কারণে ঘটতে পারে, এবং এর চিকিৎসা ও প্রতিকারের বিভিন্ন উপায় রয়েছে। সাধারণত, গলা ব্যথার জন্য দুটি প্রধান চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়: ঘরোয়া প্রতিকার এবং চিকিৎসক দ্বারা নির্ধারিত ওষুধ। নিম্নে এ দুটি পদ্ধতির বিবরণ দেওয়া হল।

ঘরোয়া প্রতিকার

হোম রেমেডি হিসাবে গলা ব্যথা চিকিৎসা অত্যন্ত জনপ্রিয়। ঘরোয়া চিকিৎসায় কিছু সাধারণ পদ্ধতি হলো:

  • গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে গার্গল করা, যা গলার প্রদাহ ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
  • মধু ও লেবুর রসের পানি পান করা, যা গলা মসৃণ করতে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
  • আদা ও তুলসীর চা পান করা, যা প্রাকৃতিক ভাবে গলা ব্যথায় আরাম দেয়।

চিকিৎসক দ্বারা নির্ধারিত ওষুধ

যদি ঘরোয়া প্রতিকার কাজ না করে, অথবা গলা ব্যথা গুরুতর মনে হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করা জরুরী। চিকিৎসক সাধারণত নিম্নলিখিত ধরনের ওষুধ প্রদান করতে পারেন:

  1. এন্টিবায়োটিকস, যদি গলা ব্যথা ব্যাকটেরিয়াজনিত হয়।
  2. ব্যথা নিরাময়কারী ওষুধ, যেমন ইবুপ্রোফেন বা প্যারাসিটামল।
  3. গলা ব্যথা ও কাশি নিরাময়ের জন্য কফ সিরাপ বা থ্রোট লজেন্স।
আরও পড়ুনঃ  কৃমি সংক্রমণে কী সমস্যা হতে পারে?

যেকোনো ওষুধ গ্রহণের পূর্বে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা প্রয়োজন এবং ডোজ অনুসরণ করা উচিত।

গলা ব্যথার সাথে �æ�ী কী খা�æ�ার এড়ানো উচিত?

গলা ব্যথা নিরাময়ের জন্য এবং আহার সচেতনতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়ায় কিছু বিশেষ খাবার এবং পানীয় এড়িয়ে চলা অত্যন্ত জরুরি। অ্যাসিডিক, অত্যন্ত গরম বা শীতল খাবার এড়ানো উচিত, যা গলা ব্যথাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।

অত্যন্ত শীতল বা গরম পানীয়

গলা ব্যথা হলে অত্যন্ত শীতল বা গরম পানীয় এড়ানো জরুরি। এসব পানীয় গলার টিস্যুগুলিতে উদ্দীপনা সৃষ্টি করে এবং ব্যথাকে তীব্র করে তুলতে পারে।

অ্যাসিডিক ও শাটশালাদার খাবার

  • টমেটো, কমলালেবু এবং লেবুর মতো অ্যাসিডিক ফল
  • সস, ভিনেগার, এবং চর্বিযুক্ত মাংস
  • শীতল পানীয় ও কার্বোনেটেড পানীয়

এই খাবারগুলি এড়ানো গলা ব্যথা নিরাময়ে এবং খাবার এড়ানোর মাধ্যমে সাধারণ আহার সচেতনতা বাড়াতে সহায়ক হবে।

গলা ব্যথা নিরাময়ের জন্য কি�æ� ঘরোয়া উপায়

গলা ব্যথা উপশমের জন্য বহু চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞ ঘরোয়া চিকিৎসা পরামর্শ দেন। প্রাকৃতিক উপাদান দ্বারা গলা ব্যথা নিরাময় এর কয়েকটি সহজ ও কার্যকরী উপায় আমরা এখানে তুলে ধরছি।

গরম লবণাক্ত জল

গলা ব্যথা উপশমের জন্য গরম লবণাক্ত জল দিয়ে গার্গল করা একটি প্রচলিত এবং কার্যকর ঘরোয়া চিকিৎসা। উষ্ণ জলে লবণ মেশানো হয়, যা গলার অস্বস্তি ও প্রদাহ কমিয়ে এনে আরাম দেয়। এই পদ্ধতি প্রদাহজনিত গলা ব্যথা এবং সংক্রমণ হ্রাসে অত্যন্ত ফলপ্রসূ হতে পারে।

মধু ও লেবুর পানি

মধু এবং লেবুর পানি পান করা এক অসাধারণ গলা ব্যথা উপশম পদ্ধতি। মধুর অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং প্রদাহবিরোধী গুণ সংক্রমণ হ্রাস করে, এবং লেবুর ভিটামিন C ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। এক কাপ গরম পানিতে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে নিয়মিত খেলে গলা ব্যথা উপশমান্তে খুব দ্রুত ভালো ফল পাওয়া যায়।

ডাক্তার কখন দেখানো উচিত?

গলার সাধারণ ব্যথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে, কিন্তু কখন আপনার একজন গলা ব্যথা ডাক্তার বা ENT চিকিৎসা বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া উচিত? এখানে কিছু পরিস্থিতি তুলে ধরা হলো, যেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অপরিহার্য।

দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা

যদি আপনার গলা ব্যথা এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে থাকে এবং কোনো স্বাভাবিক নিরাময় পদ্ধতি কাজ না করে, তাহলে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানো জরুরি। দীর্ঘমেয়াদি গলা ব্যথা গভীরতর সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে, যেমন ইনফেকশন, অ্যালার্জি অথবা অন্যান্য জটিলতা।

আরও পড়ুনঃ  বিড়ালের নখের আচরে কি সমস্যা হয়?

তীব্রতর গলা ব্যথা

যদি গলা ব্যথা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, খাবার গিলতে বা কথা বলতে কষ্ট হয়, তাহলে তা আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তীব্র গলা ব্যথা আপনার দৈনন্দিন জীবনযাপনে বাধা দিতে পারে এবং এটি ENT চিকিৎসা প্রয়োজন করতে পারে। এটি সাধারণত নিউমোনিয়া, টনসিলিটিস অথবা অন্যান্য জটিল মেডিক্যাল অবস্থার লক্ষণ হতে পারে।

  • যদি জ্বর সহ গলা ব্যথা হয়
  • যদি গলায় পুঁজ বা রক্ত দেখা দেয়
  • যদি চিকিৎসা ছাড়া ব্যথা কমে না যায়

এই পরিস্থিতিগুলিতে অবিলম্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানো উচিত। সঠিক চিকিৎসা ও পরীক্ষা নিশ্চিত করার মাধ্যমে আপনার গঠনমূলক চিকিৎসা এবং সুস্থতা নিশ্চিত করা সম্ভব।

গলার যত্ন নেওয়ার উপায়

সুস্থ এবং স্বাচ্ছন্দ্য জীবনযাপনের জন্য গলা যত্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রাকৃতিক উপায় গ্রহণ করে এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা বজায় রাখলে, গলা সমস্যা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

সঠিক হাইড্রেশন

যথেষ্ট পানি পান করা গলার স্বাস্থ্য বজায় রাখার একটি প্রাকৃতিক উপায়। দৈনিক পানি পানের মাধ্যমে শরীর এবং গলা ভালোভাবে হাইড্রেটেড থাকে, যা শুকনোতা প্রতিরোধ করে এবং গলা ব্যথা এবং অস্বস্তি কমায়।

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন

  • ধূমপান এড়ানো এবং পরিবেশ দূষণ থেকে দূরে থাকা।
  • নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা।
  • স্বাচ্ছন্দ্য ও পরিষ্কার পরিবেশে থাকা।

এই পদ্ধতিগুলি মেনে চললে গলা যত্ন অনেক সহজ এবং কার্যকরী হয়ে ওঠে, যা সবমিলিয়ে আপনার স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করে।

গলা ব্যথার প্রতিরোধ কিভাবে �æ�রবেন?

বিভিন্ন কারণে গলা ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে, যেমনঃ স্ট্রেপ থ্রোট, অ্যাপিগ্লোটিটিস, মুখ বা গলার ইস্ট সংক্রমণ, এসোফাজিটিস ইত্যাদি। এই সমস্যাগুলির উপসর্গ ও চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ভর করে অনেক বিষয়ের উপর। তবে গলা ব্যথা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে আমাদের কিছু পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। এখানে জনসাধারণের জন্য কিছু উপদেশ দেওয়া হল, যা অনুসরণ করে গলা ব্যথার ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

নিয়মিত হাত ধোয়া

গলা ব্যথা প্রতিরোধ করতে নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি। বিভিন্ন প্রকার ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া হাতের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়ে গলা ব্যথার কারণ হতে পারে। হাত ধোয়াটি সংক্রমণ এড়াতে এবং গলা ব্যথা প্রতিরোধে অভ্যন্তরীণ ইমিউনাইজেশন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে।

ভ্যাকসিন নেওয়া

ভ্যাকসিন নেওয়া একটি সফল পন্থা যা শিশুদের এবং বড়দের গলা ব্যথা থেকে রক্ষা করে। বিশেষ করে ভাইরাসজনিত রোগ যেমন ফ্লু, মেইনজোকক্কাল মেনিনজাইটিস এবং অবশ্যই COVID-19 এর মতো মহামারি প্রতিরোধে ভ্যাকসিন অপরিহার্য। ইমিউনাইজেশন কার্যক্রম অনুসরণ করে এবং প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন গ্রহণ করে গলা ব্যথা ও এর জটিলতা থেকে সুরক্ষা নেওয়া যেতে পারে।

এ ধরনের আরো আর্টিকেল

Back to top button